Daruharidra
  • ধান্যগৃহ
  • কবিতা
  • গল্প
  • গদ্য
  • প্রবন্ধ
  • উপন্যাস
Daruharidra
  • ধান্যগৃহ
  • কবিতা
  • গল্প
  • গদ্য
  • প্রবন্ধ
  • উপন্যাস
Daruharidra
No Result
View All Result
Home সাক্ষাৎ পাতা

কবি শামীম রেজার সঙ্গে একান্ত আলাপদীর্ঘে —বাংলাদেশের কবিতা

Daruharidra by Daruharidra
04/06/2020
in সাক্ষাৎ পাতা
0
মিথিলেশ ভট্টাচার্য
81
VIEWS

দেশভাগ থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের সামগ্রিক বাংলা কবিতা নিয়ে একটি আলাপদীর্ঘে কবি শামীম রেজা। কবি শামীম রেজা নব্বই দশকের বাংলাদেশের একজন অন্যতম কবি। আলাপচারিতায় ছিলেন কবি সুমন গুণ।দারুহরিদ্রা ছিল শ্রোতার পটভূমিকায়।

 

◼সুমন গুণ– শামীমের কাছে একটাই মৌলিক জিজ্ঞাসা মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশে তো একটা লেখালেখির ধরণ তৈরি হয়েছিল। এটা খুব স্বাভাবিক সারা পৃথিবীতেই এমন ঘটনার পর এরকম কবিতার প্রচলন ঘটে।সেটা অনেকদিন ধরে ঘটেছে। এমন লেখার মধ্যে যা যা স্বাভাবিক উপাদান একটু উচ্চকণ্ঠ ব্যাপার সেটা তো থাকবেই এবং এই ধরণের অনেক ভালো কবিতাও বাংলায় লেখা হয়েছে। এইবারে, আমার ধারণা সেটা আসলে তোমার কাছেই জানতে চাওয়া মোটামুটি আশির শেষ বা নব্বই থেকে হয়ত, হয়ত বলছি এ জন্য আমার বলার চেয়েও তোমার বলার বিষয় এটা। বাংলাদেশের বাংলা কবিতায় স্বরটা আস্তে আস্তে কোথাও পাল্টাতে শুরু করল যেহেতু সারা পৃথিবীতে তখন আমরা নানা মাধ্যমের দৌলতে প্রায় এক হয়ে উঠতে শুরু করেছি…

◼শামীম রেজা – মূলত ৪৭ এর দেশবিভাগের পরে এই বিভাজনটা আমরা না চাইলেও ঔপনিবেশিক শাসক এবং তার অনুসারীরা কাণ্ডটি ঘটিয়ে দিল। ধর্মকেন্দ্রিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে এই কাজটি করা হল। তার অভিঘাত আমরা চারবছরেরই মাথায় পেয়ে যাই বাহান্নর ভাষা আন্দোলন এবং সেখানে যে শহিদ হন তাঁদের মাধ্যমে। সেই সময়ের চল্লিশের দশকের কবিতা এখানকার এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটও বদলে যায় এবং সেখানে ওই উচ্চকন্ঠের কথাগুলো বলা হচ্ছিল যে হাসান হাফিজুর রহমান, সৈয়দ আলী হাসান চল্লিশের যে কবিরা ছিলেন ।

◼সুমন গুণ – উচ্চকণ্ঠ শব্দটা একটু প্রত্যাহার করছি। কারণ সবাই যে উচ্চকণ্ঠে লিখেছেন তা নয়। ওই বিষয় নিয়ে অনেকে নানা রকম স্বরেই লিখেছেন এবং অসাধারণ কিছু কবিতাও কিন্তু আমরা সেসময় পেয়েছি।

◼শামীম রেজা-আহসান হাবীব লিখলেন অন্য ঘরানার কবিতা। চল্লিশের কথা বলছি।ফররুখ আহমেদ লিখলেন ইসলামি ভাবধারায় কিন্তু সেই কন্ঠস্বরটা অনেকটা গালিব, অনেকটা হাফিজ, ওমর খৈয়াম কেন্দ্রিক। সুফিবাদের ঘরানাটাও আমরা দেখতে পাই। আরেকটা স্রোত চল্লিশের দশকে ছিল। ইসলাম কেন্দ্রিক সাহিত্য রচনা। সেটা ওখানেই ভেঙে দেয় আমাদের আধুনিক কবিরা। পঞ্চাশে এসে শামসুর রাহমানরা প্রবল ভাবে আঘাত হানেন। ফলে আমাদের মূল স্রোত ধারায় সেকুলার জায়গাটা আছে। পঞ্চাশে এসে একেবারে বাংলাদেশের কবিতা আধুনিকায়ন হল যার হাতে তিনি শামসুর রাহমান। কিন্তু শামসুর রাহমানের প্রথম দু’টি বই রৌদ্র করোটিতে প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে সেটা অনেকটা আচ্ছন্নভাবে জীবনানন্দ কেন্দ্রিকতার মধ্য থেকেই উঠে এসেছে। পরে তিনি জাতীয়তাবাদী একটা চেতনা ধারণ করেন। সেটা আমরা তাঁর যে বন্দি শিবির থেকে ৭১ পরবর্তী বই সেই কবিতাগুলির মধ্যে পাই। এই সময়ের আল মাহমুদ কিন্তু দুই ধরণের কবিতাই লিখতেন। আল মাহমুদের মধ্যে যে ঘরানাটা দেখতে পাই সেটা সুফিবাদ না। কিন্তু ‘মুসলিম’ শব্দগুলো এমনভাবে এবং প্রাত্যহিক জীবনের শব্দ সেগুলো তিনি ব্যবহার করলেন। আমরা দেখব তিনি ধর্ম নিয়ে কবিতা লিখেছেন কিন্তু তিনি বলছেন,’ আমাদের ধর্ম হোক ফসলের সুষম বন্টন’ তিনি তখন একদম সাম্যবাদের ঝাণ্ডাই উড়াচ্ছেন।কিন্তু তার শব্দের মধ্যে যে শব্দগুলো হয়ত এখানকার না এবং প্রচল না সেই শব্দগুলোকে তিনি ব্যবহার করেছেন। যেমন সোনালী কাবিন। শব্দটাই পুরো বুঝিয়ে দিচ্ছে তাঁর শব্দ ব্যবহারের বৈশিষ্ট্যটা কী। ওই সময়ে আবার ‘আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি,আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি’, যারা কবিতা পড়তে জানেনা এই লেখা লিখলেন আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ । পঞ্চাশে এসে আমরা দেখলাম শহীদ কাদরী একবারেই ইউরোপের কবিতার অনেকটা ধাচ আত্মস্ত করে নিজের মত করে কবিতা লিখলেন। আশির দশকে সৈয়দ শামসুল হকের এই কবিতা পাই, ‘পরানের গহীন ভিতর’ সেখানে রুমাল নাড়ে পরানের গহীন ভিতর। এখানে কিছু বৈষ্ণব পদাবলী কিংবা আমাদের চিরায়ত সাহিত্য কিংবা সুফিবাদী কবিতার ঘরানার মধ্যে তাঁর এই কাব্যগ্রন্থটি দেখা যায়। যদিও বৈশাখে রচিত পংক্তিমালা বা অন্যান্য কবিতায় আমরা এটা লক্ষ্য করি না। আমরা ষাটে এসে এক ঝাঁক তরুণ কবিকে পাই।’সতত ডানার মানুষ’ কাব্যগ্রন্থে শিকদার আমিনুল হক লিখলেন একদমই গদ্য কবিতা এবং সেটা আবার অরুণ মিত্রের ঘরানায় না ফরাসি কবি স্যঁ জন পাস কে আত্মস্থ করে নিজস্ব ঘরানা তৈরি করলেন বাংলা কবিতায়। ষাটের দশকের কবি আবদুল মান্নান সৈয়দের সুররিয়ালিস্টিক কবিতার প্রথম বই জন্মান্ধ কবিতাগুচ্ছ তারপর মাছ সিরিজ। যেটা এখানে পশ্চিমবাংলায় এই চর্চাটাই ঘটেনি। তবে তিনি আর বেশিদূর কাজ করলেন না কবিতায়। ষাটের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য এবং বহুল পঠিত অকাল প্রয়াত কবি আবুল হাসান। যার কবিতার মায়ায় চিত্রকল্পের ছায়ায় পরবর্তী প্রজন্ম আবিষ্ট হয়ে ছিল দীর্ঘদিন। নির্মলেন্দু গুণ একদম জনপ্রিয় ধারার… প্রথম তিনি হুলিয়া এবং যে কবিতাগুলো লিখেছেন সেটা জাতীয়তাবাদী ঘরানায় উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং একাত্তর নিয়ে তাঁর সবচেয়ে ভালো কবিতাগুলো। কিন্তু তিনি আসলে শেষপর্যন্ত নেরুদার মত প্রেমের কবিই র‍য়ে গেলেন। মহম্মদ রফিক লিখলেন একেবারে কীর্তিনাশা, ঘাউদিয়া, কপিলা এরকমের সিরিজ কবিতা যেটা মাটিগন্ধী আমরা অনেকটা বলব মিথগন্ধী। আবার রফিক আজাদ লিখলেন পুরো রাজনৈতিক কবিতা, চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া। অন্যরকমের বই এর নামগুলোই বলে দিচ্ছে কবিতাগুলো কেমন। ষাট একটা বিশাল সম্ভাবনা এবং তারা একটা অন্য ধাপ । সত্তরে এসে যে উচ্চকণ্ঠের কথা বলছ অবশ্যই রুদ্র মহম্মদ শহিদুল্লাহ, কামাল চৌধুরী এরা লিখলেন, বাতাসে লাশের গন্ধ। এগুলো আমরা পাচ্ছি। সেই সময়কালের পরে ঘাসের ঘটনা নামে আবিদ আজাদ কবিতা লিখলেন। সত্তরকে আমরা একটু অবজ্ঞার সুরেই দেখতাম।আশির দশকের কবিতা আলোচনা শুরুতেই যে নামটি আসবে সেটি হচ্ছে খোন্দকার আশরাফ হোসেন। পূর্ব বাংলার মাটি ও সুফি দর্শন দ্বারা তাড়িত তার কবিতা। আশির দশকে এই মুহূর্তে ভীষণভাবে আলোচিত কবি হচ্ছেন রাজা হাসান। যিনি জীবনানন্দের ভুবন থেকে বেরিয়ে নিজে ভিন্ন মহাজাগতিক তার খোঁজে নিজেকে নিবৃত করে রাখছেন। আশিতে এসে কয়েকজন কবি তার মধ্যে মাসুদ খান, সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ, জুয়েল মাজহার, সাজ্জাদ শরিফ,ফরিদ কবীর এরা এসে বললেন, কবিতা উচ্চকণ্ঠ হবে না, কবিতা হবে শুদ্ধচারী। আশি থেকে শুরু হয়ে নব্বই এসে একটা প্রবল জোয়ার ওপারে এপারে মিলে দু’পারে মনে হচ্ছে যে প্রতিযোগিতা হচ্ছে এরকম। কি রকম সেটা? মঙ্গলকাব্যের ধারাবাহিকতায় মুজিব ইরম লিখলেন মুজিবমঙ্গল। আলাওল এর ধারাবাহিকতায়ও লেখা হল । রাইসু স্যাটায়ারকে কবিতা করার চেষ্টা করলেন । এই সময় পর্বে আমাদের এক একজন আঞ্চলিকতা কিংবা সেটাকে উতরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেন। যেমন আফ্রিকার কবিদের কিংবা লাতিন আমেরিকার কবিদের প্রভাব এল বাংলাদেশে।এই সময়ে এই প্রভাবটা এসে পড়ল কবিতা শুধু যে উত্তরআধুনিক কোনো ব্যাপার না, আমরা মিথ, পুরাণ, লোকজ সম্পদটাকেই আত্মীকরণ করলাম।

◼সুমন গুণ– আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার কবিতার প্রভাবটা সেই সময় বাংলাদেশের কবিতায় যতটা পড়েছে এটা বলা উচিত আমাদের এখানে তেমনভাবে পড়েনি।

◼শামীম রেজা– নব্বইএ এসে এই কাজটা করা হল কে কোন জায়গা থেকে নিজের আঞ্চলিকতাকে আন্তর্জাতিকতায় রূপান্তর করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাধ্যম বেছে নিল। এই মাধ্যমের সময়কালে বাংলাদেশে প্রায় লিখতে এসেছিলাম প্রায় ছ’শো কবি। অনেক লিটল ম্যাগাজিন খুব দুর্দান্তভাবে প্রকাশিত হচ্ছিল তখন এখন সেই লিটল ম্যাগাজিনগুলি মরেও গেছে প্রায়। নিঃস্বর্গ, দ্রষ্টব্য এবং খুব কেন্দ্রের বাইরে থেকে এরা জোগান দিত। এরা কেন্দ্রটাকে ভেঙে দিয়ে আলাদা হয়েছে।

◼সুমন গুণ– হ্যাঁ, এখানেও সেটা হয়েছে। মোটামুটি গত কুড়ি পঁচিশ বছর ধরে। বাংলাদেশের সুবিধা হচ্ছে এই বাইরের সঙ্গে আন্তর্জাতিকতার সঙ্গে যোগাযোগটা যত স্বাভাবিক এখানে অতটা কিন্তু নয়।

◼শামীম রেজা– এখানে আরেকটা জিনিস হয়নি। ধরা যাক, সুমন গুণ কিংবা জহর সেন মজুমদার কিংবা নিখিলেশ রায় যারা আসলে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত কিংবা রণজিৎ দাশকেও বলব তিনি একটা সম্পাদনাও করেছেন বটে ।এখানে এই তৃষ্ণাটা জাগেনি কিংবা আমাদের পড়ার আগ্রহের ঢেউটা এই পর্যন্ত এসে পৌঁছেনি। ফলে এখানে আমাদেরকে নিয়ে চর্চা করার মত অবস্থাটা নেই আর আমরা যেখানে সহজেই পশ্চিমবাংলার সবকিছু পেয়ে যাই এখানে এটা সহজ নয়। শিলচরে এসেও দেখলাম যে এখানে বই পাওয়াটা খুব দুরূহ। আমাদের যেহেতু একটা প্রতিযোগিতা ছিল আমার কাছে আফ্রিকার একজনের বই এসে পৌঁছচ্ছে অন্যদিকে তাদের কাছে আরেকজনের বই আছে কিনা সেটা নিয়ে একটা প্রতিযোগিতা ছিল। এই প্রতিযোগিতা ফলটা নব্বইএ বিশাল প্রভাব বিস্তার করেছিল। ফলে আমরা উত্তর আধুনিকতাকে ওখানে প্রত্যাখান করলাম। রাইসুরা হয়ত শুরু করেছিল। আমরা একটা ক্লাসিক ঘরানার মধ্য থেকে বেড়ে উঠা কারণ সেই ষাটের প্রভাব এবং তাঁদেরকে স্বীকার করে অস্বীকার করা আমাদের একটা গ্রুপ কবীর হুমায়ুন, চঞ্চল আশরাফ, মুস্তাক আহমেদ দিন, জফির সেতু আমরা অন্যরকমের কবিতা লেখার চেষ্টা করলাম। সেই চেষ্টার সুফল হয়ত এখন পাচ্ছে পরের প্রজন্ম। প্রজন্মই বলা যায়। প্রজন্ম আসলে তিরিশ বছরে হয় কিন্তু আমরা আসলে গুণি দশক ধরে এটা বুদ্ধদেব বসুর কল্যাণ বা অকল্যাণই হোক। ।নব্বই দশকের যাদের কবিতা বহুরৈখিক আলোচনার দাবি রাখে তাদের মধ্যে অন্যতম কবির হুমায়ূন। নব্বই ওখানে খুব পাওয়ারফুল সময় যেহেতু আমাদের এখন সবার সংগ্রহ বের হচ্ছে, শ্রেষ্ঠ বের হচ্ছে, নির্বাচিত প্রকাশিত হচ্ছে। সেইসময়ে বিশেষ করে যেটা হারিয়ে গিয়েছিল সেটা হল সুফিজম। আমাদের কবিতা সুররিয়ালিস্টিকের জায়গা থেকে বেরিয়ে সুফিবাদী ঘরানার দিকে টার্ন করল এইসময়টায় সবচেয়ে বেশি । মুস্তাক আহমেদ দিনের কবিতা লক্ষ্য করবে। মাসুদ খানের পাখিতীর্থদিনে বইটাই অসামান্য। তবে আশির কবিরাও নব্বই এ এসে ভালো ভালো কবিতা লিখেছেন। আর নব্বই এ কবিরা এইসময়ে শুরু করে ধরো, এমনও কবি আছেন যার একটা কবিতার বই ভালো তারপর আর সেই ধারাবাহিকতা রাখতে পারেন নি। যেমন কামু, টোকন ঠাকুর একটা দু’টো বই এর পরে তারা নিজেদেরই পুনরাবৃত্ত করেছেন। আবার একই ঘরানার মধ্যে ঘুরফের করছে মুজিব ইরমরা। কিন্তু সে তার ঘরানাকেই বেছে নিয়েছে। এর পরের দশকটাও খুব সম্ভাবনাময়। শূন্য যেটাকে বলছি কিংবা প্রথম দশক।

আমাদের অনুবাদ কেন্দ্রিকতার কথাও বলি।এমন কি যে মানবেন্দ্র বন্দোপাধ্যায় এখানে যে পরিমাণে অনুবাদ করেছেন কিন্তু তার চর্চাটা হয়েছে বাংলাদেশে। ভুলভাল থেকে শুরু করে শুদ্ধ।

◼ সুমন গুণ – আমার নিজের ধারণা মার্কেজের সবচেয়ে ভালো অনুবাদ হয়েছে বাংলাদেশেই। জি এইচ হাবিব।

◼শামীম রেজা– হ্যাঁ, প্রথম তিনি করেছেন। এটার কারণ হচ্ছে মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে অনুবাদের জন্য মার্কেজকে চিঠি লিখেছিলেন। তিনি অনুমতি দিয়েছিলেন কিন্তু প্রকাশক অনেক ডলার চেয়েছিল। ফলে আর সম্ভব হয় নি। আমাদের একসময় ফকনারের সাউন্ড ইনদা ফিউরি এই বইগুলো পড়ার জন্য ইংরেজির উপরই নির্ভর করতে হত।

আমাদের বয়সি যারা অর্থাৎ পঞ্চাশের নীচে বয়স বা যারা সত্তরের পরের প্রজন্ম। আমরা একটা বই করলাম লাতিন আমেরিকার গল্প সংগ্রহ যাদের জন্ম সত্তরের পরে।তাদের পঞ্চাশ জনের লেখা নিয়ে বই করেছি । তারপরে, এবারে করছি একটা আফ্রিকান গল্পের বই। এরকম পঞ্চাশ বছর বয়সি লেখকদের গল্প নিয়ে একটা সংগ্রহ। ২০১৮ এর ঢাকা লিট ফেস্টের একটা ঘটনা বলি, সপ্তম ঢাকা লিট ফেস্টের প্রধান অতিথি কবি অ্যাডাম জনসন, আমেরিকার অন্যতম পুরস্কার পুলিৎজার প্রাপ্ত, বিশেষ করে অ্যাডাম জনসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ও তুলনামূলক সাহিত্যের অধ্যাপক যিনি আমাকে প্রশ্ন করছেন, ‘তোমার কবিতার ফিলসফি কী?’ আমি যখন ওকে জিজ্ঞেস করলাম , ‘ তুমি নিশ্চয় ওমর খৈয়াম চিন? নাম শুনেছ? ‘ নাহ’। একটু বিব্রত হচ্ছে এত বড় লম্বা সাদা দাড়ি আবার পুলিৎজার পাওয়া… তারপর বললাম ‘তুমি হাফিজ পড়নি? বলল যে, নাহ। এবার ‘নিশ্চয় তুমি রুমি পড়েছ?’ বলল,’ইয়েস’ । এই ঘটনাক্রম আমাদের ওখানে ঘটছে। এইটার আসলে নির্যাসটা পাওয়া যাবে আর বিশ বছর পরে আমাদের কবিতা কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়াল।

◼সুমন গুণ– এই যে বিভিন্ন গণমাধ্যম সবচেয়ে সফলভাবে ব্যবহার করছে এবং বিভিন্ন টেকনিক্যাল ব্যাপারস্যাপারগুলো অনলাইনে এগুলো বাংলাদেশের তরুণেরা যত সফল ভাবে ব্যবহার করতে পারছে। আমরা এখানে পারছি না। তবে আস্তে আস্তে করছি আমরা। বাংলাদেশ একটা আলাদা রাষ্ট্র তো… গোটা রাষ্ট্রের সমর্থন তো বাংলা ভাষার প্রতি। ফলে ওখানে এটা সম্ভব। পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষাকে রক্ষা করার জন্য চেষ্টা কি হচ্ছে না? হচ্ছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে সে শক্তি তো নেই। এবং এই পার্থক্যটার একটা শুভ পরিণাম যে বাংলাদেশ ঘটাতে পারছে এটাই আনন্দের কথা । এবং নাও হতে পারত…এমন হতেই পারত যে ওখানে বাংলা ভাষা হতে পারে রাষ্ট্রভাষা কিন্তু ইংরেজির প্রভাব এবং আধিক্য। একসময় ইংরেজির প্রভাব শুরু হয়েছিল। কিন্ত সেটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে বাংলাদেশ।

◼শামীম রেজা– এখন বাংলাদেশে একশো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে।সেখানে চাপিয়ে দেওয়া না বাধ্যতামূলকভাবে বাংলা বিষয় আছে। বাংলার ছাত্ররা বসে নাই। ইংরেজি হয়ত বসে থাকতে পারে। আগে যেটা আমরা ভাবতেই পারি না। আমরা যখন পড়তে আসি বাংলা অনেক পিছনে ছিল ইংরেজি থেকে এখন প্যারালাল না বাংলা বরং একটু এগিয়েই আছে। আইন আদালতের ভাষা বাংলা। কাজের ভাষার কথা যেটা রবীন্দ্রনাথ বারবার বলেছেন।

আরেকটা চর্চার সুফল কি সুফল না আমরা জানিনা আকাশ সংস্কৃতির যুগে লিটল ম্যাগাজিন হারিয়ে যাচ্ছে। যেটা ভারতে, পশ্চিমবাংলায় আছে। আমরা এখন যে কাজটা করার চেষ্টা করছি সেটা হচ্ছে প্রফেশনাল একটা অনলাইন ম্যাগাজিন ডেইলি যেটা দুই বাংলাতেই নেই।এর মধ্যে আমরা শুরু করছি।আর এপারে যেটা সুবিধা লিটল ম্যাগাজিনকেন্দ্রিক ছোট ছোট গ্রুপ থেকে বড় আন্দোলন। ওখানেও আছে কিন্তু সেটা এখন ভাগ হয়ে যাচ্ছে। বেশিরভাগই লিডিং জায়গায় অনলাইন চলে যাচ্ছে।

◼সুমন গুণ– অনলাইন মাধ্যমটাকে বাংলাদেশে যেভাবে গ্রহণ করা হয়েছে সেটাতে অনেক সুবিধেও হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য লিটল ম্যাগাজিনের স্রোতটা এখনও আছে। তবে আশির দশকে যেমনভাবে ছিল তেমন নয়। আশির দশকে আগুনের মত ছোট ছোট পত্রিকা, চারপাতা, আটপাতা,ষোলো পাতার কাগজ হত। এখন যেটা হয়ে গেছে বিশেষ সংখ্যা। ম্যাগাজিনের চরিত্র নেই। ওই রাগটা নেই, আগুনটা নেই। বিশেষ বিষয় নির্ভর কাগজ। সেটা ভালো না খারাপ সেটা আলাদা ব্যাপার। বাংলাদেশে যেটা অনলাইনে বের হচ্ছে এখানে সেটা কাগজে বের হচ্ছে।

◼দারুহরিদ্রা– বাংলাদেশের শূন্যের কবিতার উপর একটু বলুন। আবার শূন্যের ভারতের বাংলা কবিতা এবং শূন্যের বাংলাদেশের বাংলা কবিতার পার্থক্য কেমন?

◼ শামীম রেজা– আমার মনে হয় পার্থক্য হয়েই যায় প্রত্যেক কবির সাথে যেমন প্রত্যেক কবির পার্থক্য আর দেশ এবং সমাজ ব্যবস্থা এবং সংস্কৃতির তো পার্থক্য আছেই সেটি তো কবি ধারণ করেন। শূন্যতে আমার কাছে এই যে নতুন করে এটা বলবই রণজিৎ দাশের অনুগামী ছিল আমারই এক বন্ধু, অনুজ কবি বিজয় আহমেদ। ও এখন যে কবিতা লিখে… রণজিৎ দাশকে আমরা এক ধরণের ক্ষেপাতামই এগুলো এখন লেখাই যায়।স্মার্ট কবিতা। তার কিছু চরণ মুখে মুখে আছে। সেই জায়গা থেকে সরে গিয়ে ওরা মাটিকেন্দ্রিক এবং যাপিত জীবনের কবিতা লেখার চেষ্টা করেছে, বিজয়। কিংবা খুবই সুররিয়ালিস্টিক ঘরানায় জাহিদ সোহাগ এবং জুয়েল মুস্তাফিজ এদের যেমন বই এর নামই হচ্ছে,জুয়েল মোস্তাফিজের, জুয়ার আসরে কোনো আঙুলই মিথ্যা নয় কিংবা ব্যাটারিচালিত ইচ্ছা জাহিদ সোহাগের। এরকমের কাজ হচ্ছে। আবার হিজল জোবায়ের দ্বিতীয় দশকের কিংবা পাভেল আল ইমরান এরা অন্যরকমের কবিতা লিখছে একদম পুরো ছন্দবদ্ধ। যেটা প্রবোধবাবুর দেওয়া ছকে কিন্তু তার মধ্যে ওখানকার যাপিত জীবনকে ধারণ করার চেষ্টা করেছে।এভাবে শূন্যের অনেক নাম বলা যাবে।

     সুতপা চক্রবর্তী, রাজেশ শর্মা – দারুহরিদ্রার পক্ষ থেকে আপনাদের দু’জনকে মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ!

The Review

কবি শামীম রেজার সঙ্গে একান্ত আলাপদীর্ঘে —বাংলাদেশের কবিতা

8.2 Score

দেশভাগ থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের সামগ্রিক বাংলা কবিতা নিয়ে একটি আলাপদীর্ঘে কবি শামীম রেজা। কবি শামীম রেজা নব্বই দশকের বাংলাদেশের একজন অন্যতম কবি। আলাপচারিতায় ছিলেন কবি সুমন গুণ।দারুহরিদ্রা ছিল শ্রোতার পটভূমিকায়।

PROS

  • Good low light camera
  • Water resistant
  • Double the internal capacity

CONS

  • Lacks clear upgrades
  • Same design used for last three phones
  • Battery life unimpressive

Review Breakdown

  • Design 0
  • Performance 0
  • Camera 0
  • Battery 0
  • Price 0
Previous Post

মিলনকান্তি দত্ত | তৃতীয় সংখ্যা

Next Post

মনোজমোহন চক্রবর্তী | দ্বিতীয় সংখ্যা

Daruharidra

Daruharidra

Next Post
মনোজমোহন চক্রবর্তী | দ্বিতীয় সংখ্যা

মনোজমোহন চক্রবর্তী | দ্বিতীয় সংখ্যা

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

No Result
View All Result

RECENT POSTS

সঞ্জয় চক্রবর্তী

সঞ্জয় চক্রবর্তী

08/02/2021
শংকরজ্যোতি দেব

শংকরজ্যোতি দেব

24/01/2021
ঠাকুরমার খাতা

ঠাকুরমার খাতা

16/01/2021
রবীন্দ্রনাথ ও বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী জনগোষ্ঠী : রাবীন্দ্রিক সম্পর্কের  একশো বছর | প্রথম পর্ব

রবীন্দ্রনাথ ও বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী জনগোষ্ঠী : রাবীন্দ্রিক সম্পর্কের একশো বছর | প্রথম পর্ব

08/01/2021
মনোজমোহন চক্রবর্তী | দ্বিতীয় সংখ্যা

মনোজমোহন চক্রবর্তী | দ্বিতীয় সংখ্যা

05/09/2020

পলিয়ার ওয়াহিদ | তৃতীয় সংখ্যা

05/09/2020
পার্থজিৎ চন্দ | তৃতীয় সংখ্যা

পার্থজিৎ চন্দ | তৃতীয় সংখ্যা

03/09/2020
বিশ্বজিৎ | তৃতীয় সংখ্যা

বিশ্বজিৎ | তৃতীয় সংখ্যা

03/09/2020
সঞ্জয় চক্রবর্তী | তৃতীয় সংখ্যা

সঞ্জয় চক্রবর্তী | তৃতীয় সংখ্যা

03/09/2020
রজার রবিনসন | তৃতীয় সংখ্যা

রজার রবিনসন | তৃতীয় সংখ্যা

03/09/2020

RECENT VIDEOS

https://www.youtube.com/watch?v=77ZozI0rw7w
Daruharidra

Follow Us

আমাদের ঠিকানা

দারুহরিদ্রা
কুঞ্জেশ্বর লেন
(বরাকভ্যালি একাডেমির নিকটবর্তী)
নতুন ভকতপুর, চেংকুড়ি রোড
শিলচর, কাছাড়, আসাম
পিন-788005

ডাউনলোড করুন

সাবস্ক্রাইব

Your E-mail Address
Field is required!
Submit
  • আমাদের সম্পর্কে
  • লেখা পাঠানো
  • যোগাযোগ

Copyright © All rights reserved Daruharidra | Development by Prosenjit Nath

No Result
View All Result
  • ধান্যগৃহ
  • কবিতা
  • গল্প
  • গদ্য
  • প্রবন্ধ
  • উপন্যাস
  • সাক্ষাৎ পাতা
  • অনুবাদ পাতা
  • আর্কাইভ
  • আমাদের সম্পর্কে
    • লেখা পাঠানো
    • যোগাযোগ

Copyright © All rights reserved Daruharidra | Development by Prosenjit Nath