Daruharidra
  • ধান্যগৃহ
  • কবিতা
  • গল্প
  • গদ্য
  • প্রবন্ধ
  • উপন্যাস
Daruharidra
  • ধান্যগৃহ
  • কবিতা
  • গল্প
  • গদ্য
  • প্রবন্ধ
  • উপন্যাস
Daruharidra
No Result
View All Result
Home উপন্যাস

মিথিলেশ ভট্টাচার্য | তৃতীয় সংখ্যা

বাবলির জন্য রূপকথা | ধারাবাহিক | প্রথম পূর্ণাঙ্গ উপন্যাস | তৃতীয় কিস্তি

Daruharidra by Daruharidra
03/09/2020
in উপন্যাস
0
মিথিলেশ ভট্টাচার্য | দ্বিতীয় সংখ্যা
30
VIEWS

|| চতুর্থ অধ্যায় ||

নতুনপাড়ার পথটা বড় নির্জন এখন। দুপুরবেলার তীব্র রোদে ভেসে যাচ্ছে শান্ত, স্তব্ধ পাড়ার চারদিক। ক্বচিৎ এক দুটো সাইকেল রিকশা প্রায় শব্দহীন ভাবে আনাগোনা করছে পথে। হঠাৎ একটা চোঁয়া ঢেকুর ওঠে মৃগাঙ্কমোহনের। ওই সদ্য খেয়ে আসা রসগোল্লা আর সিঙ্গাড়ার। রসগোল্লাটা যেন একটু বাসি ছিল। মৃগাঙ্কমোহনের জিহবার স্বাদ নেবার ক্ষমতা অসাধারণ। এক টুকরো রসগোল্লা মুখে দিয়েই একটু টকটক স্বাদ অনুভব করছিল সে।
পণ্ডিতজির স্ত্রী রীতা বৌদি বলছিলেন, সিঙ্গাড়াটা গরম, এখানে মিষ্টি খুব ভালো বানায়, খেয়ে দেখুন মৃগাঙ্কবাবু–।
চামচ দিয়ে কেটে একটুকরো রসগোল্লা মুখে পুরেই কেমন টক্ টক্ স্বাদ পেয়েছিল মৃগাঙ্কমোহন। দ্বিধান্বিত হয়েছিল পুরো রসগোল্লা টা খাবে কীনা। না খেলে রীতা বৌদি মনক্ষুণ্ণ হবেন, মিষ্টির গুণাগুণ জানতে চাইবেন। তাই কোনোরকমে গোটা মিষ্টিটা গলাধকরণ করেছিল সে। তবে সিঙ্গাড়াটা সত্যিই ভালো। সদ্য ভাজা মুচমুচে। চায়ের সঙ্গে খেতে ভালো লেগেছিল।
ভিতর ঘর থেকে পাটভাঙা পোশাক পরে বেরিয়ে এসেছিলেন পণ্ডিতজি। ওর দিকে একপলক তাকিয়ে মৃগাঙ্কমোহন বলেছিল, কোথাও বেরুচ্ছেন নাকি?
হ্যাঁ, একটু কাজ আছে –।
আমিও একটা কাজ নিয়ে এসেছিলাম আপনার কাছে–।
কী কাজ, বলুন তো–? সামনের সোফায় মুখোমুখি বসেন পণ্ডিতজি।
আপনার ছাত্রী আমার ছোটবোন জপমালা, ওর মেয়ে জুইয়ের জন্য একটি আলাপ আপনি দিয়েছিলেন–?
কথাটা শুনে দু’মুহূর্ত নিশ্চুপ থেকে নিকট অতীত-স্মৃতি ঘেঁটে পণ্ডিতজি বলেন, সেতো অনেকদিন আগে, কিন্তু জপমালা তো আমাকে কিছু জানায়নি!
সেজন্যেই তো এসেছি , যদি ছেলেটার এখনও বিয়ে না হয়ে থাকে–
দাঁড়ান, দাঁড়ান, অনেকদিন তো হয়ে গেল, খোঁজ নিতে হবে–
একটু কষ্ট করে খোঁজ নিন্ না পণ্ডিতজি –অনুনয়ের কন্ঠে বলে মৃগাঙ্কমোহন।
নেব, নেব–। আপনি কি আগের জায়গাতেই আছেন? কৌতূহলী সুরে জানতে চান পণ্ডিতজি। অনেকদিন পর মৃগাঙ্কমোহনের সঙ্গে দেখা হল কীনা।
না থেকে উপায়, আর যাব কোথায় বলুন–! সহজ সুরে প্রত্যুত্তর করে মৃগাঙ্কমোহন।
আপনাদের পাড়ার নামটা যেন কী–মনে করার ভঙ্গিতে বলেন পণ্ডিতজি।
এই তো আগে ছিল ইটভাটা রোড, এখন হয়েছে হিলপার্ক ভিউ–।
আপনাদের বাড়ির সামনের রাস্তা যেন কতদূর গেছে–?
আউলিয়া হয়ে একবারে সোনাই-আইজল রোডে পড়েছে–।
হ্যাঁ হ্যাঁ আউলিয়া! নামটা মনে পড়ছে এখন। বেশ উৎসাহের সুরে বলেন পণ্ডিতজি। জানেন বহুবছর আগে একবার আমি গিয়েছিলাম ওদিকে। ইচ্ছা ছিল সস্তায় একটুকরো জমি কিনব।সেখানে গিয়ে দেখি রাস্তার দু’ধারে ক্ষেতের মধ্যে সারি সারি পিলার পোঁতা। একজন বলল, জমি কিনতে হলে আরও ভিতরে যেতে হবে। আর গেলাম না।
কেন, এখনও তো আউলিয়ার কাছে উড়িয়া টিলার জমি বিকি হচ্ছে–।
ওখানে আবার উড়িয়া টিলাও আছে নাকি?
আছে তো। গোটা একটা টিলা জুড়ে উড়িয়াদের বসতি। এখন টিলা কেটে কেটে মাটিও বিকি হচ্ছে, জমিও–।
তাই–?
হ্যাঁ। ওই বিশাল টিলা তো অনেক পুরোনো৷ ব্রিটিশরা চা বাগানের কাজের জন্য ওদের উড়িষ্যা থেকে নিয়ে এসেছিল একসময়–।
তাতো জানিনা। আচ্ছা, আউলিয়া নামের পিছনেও কী ওরকম কোনো কিছু আছে? সকৌতুকে জানতে চান পণ্ডিতজি।
‘আউল’ শব্দের মানে জানেন তো?
না। বলুন তো কী?
সহজপন্থী সাধক যারা দৈবশক্তির অধিকারী তাদের আউল বলে। আর ওই আউল সম্প্রদায়ের প্রথম বসতি ছিল বলে ওজায়গার নাম হয় আউলিয়া। এককথায় আউলিয়া বা দরবেশ সম্প্রদায়ের বসতি আর কী।
বাঃ ব্বা, এত কিছু তো জানি না! পণ্ডিতজি সরল কন্ঠে নিজের অজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কথা বলার উৎসাহে মৃগাঙ্কমোহন আবার বলে, আউলিয়ার আগের নাম ছিল সৈয়দি বাজার। সৈয়দ জানেন তো?
পণ্ডিতজি এবারও মাথা নেড়ে নিজের অজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

‘সৈয়দ’ হচ্ছে হজরত মোহাম্মদের দৌহিত্র অর্থাৎ ছেলের ঘরের নাতি ইমাম হুসেনের বংশের সম্ভ্রান্ত মুসলমানদের উপাধি–।

বাঃ ব্বা, আপনি তো অনেক খবর রাখেন, –মৃগাঙ্কমোহনের মুখের দিকে সপ্রশংস দৃষ্টিতে তাকান পণ্ডিতজি, তারপর বলেন, আমি ওই একবারেই গিয়েছিলাম ওদিকে। আমরা হচ্ছি বরাকপারের কাশীপুর চা-বাগানের মানুষ।আমার দাদামশাই ওই বাগানেই কাজ করতেন কীনা, তাই এদিকটাই আমার বিশেষ পরিচিত, পছন্দও–।
তাই বুঝি নতুনপাড়ায় এসে ঘর বাঁধলেন?
হ্যাঁ। তারপরওতো অনেককাল হয়ে গেল। তখন শহর শিলচর কত ছোট ছিল–!

কথায় কথায় পুরনো শহর শিলচরের গল্প শুরু হয়ে গেছিল।পণ্ডিতজি বলছিলেন, শিলচর তো ছিল একটি মার্কেট। ব্রিটিশরা চা-বাগিচা গড়ল ওটাকে কেন্দ্র করে। অম্বিকাপট্টি ছিল তখনকার দিনের রেসিডেন্সিয়েল এরিয়া। সিভিল হাসপাতালের পরে তো শহরই ছিল না।ওদিকে তো বিশেষ কেউ যেতও না–।
ওসব কথা শুনতে শুনতে মৃগাঙ্কমোহনের মনে পড়ছিল একটি বইয়ের কথা।শিলচরের কড়চা। লেখক কালীপ্রসন্ন ভট্টাচার্য। বলল সে কথা পণ্ডিতজিকে।
উনি শুনে একটু অবাক সুরে বললেন, তাই নাকি, জানি না তো–!

সে কী, ন্যায়পঞ্চাননের বাড়ির কথা আপনি জানেন না! বাড়িটা শহরের মধ্যিখানে। ওই দু’জন তো ভারত বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব। একজন নৃত্যাচার্য মুকন্দদাস ভট্টাচার্য, অন্যজন কালিকাপ্রসাদ, লোকগানের মুকুটহীন সম্রাট!
ও দু’জনকে জানি। বিশেষ করে কালিকাপ্রসাদ, ওর দোহার দলের গান তো কত শুনেছি–।
হ্যাঁ, কালিকাপ্রসাদ তো অল্পবয়সে লিজেন্ডারি ফিগার হয়ে উঠছিলেন–।
আচ্ছা, মৃগাঙ্কবাবু, আপনারা এদেশে কবে এসেছেন, একাত্তরে -সহসা পণ্ডিতজি প্রসঙ্গান্তরে যান।
না না, আমরা তো এসেছি সেই পঞ্চাশে–
তাই? তখন যদি সকলে একসাথে এপারে চলে আসত–!
মানে?
হিন্দুরা সকলে একসাথে চলে এলে আজকের এই সমস্যা হতো না–।
সমস্যা অবশ্যই হতো। জোর গলায় বলে মৃগাঙ্কমোহন। অসমীয়াদের সব সময় একটা বদ্ধমূল ধারণা যে বাঙালিরা, বিশেষ করে হিন্দু বাঙালিরা তাদের আর্থিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক উন্নতির ক্ষেত্রে সবচে বড় বাধা। তাইতো আজকে এন আর সি চালু করে বাঙালিদের ঠেকানোর প্রাণপণ চেষ্টা চলছে।আরেকটা কথা পণ্ডিতজি, সাতচল্লিশ থেকে একান্ন সাল অব্দি সবচে বেশি মানুষ এসেছে এদেশে আর এরপর যারা এসেছে তারাও এসেছে অত্যাচারিত হয়ে। কথাই তো ছিল পাকিস্তানে হিন্দুরা যখন ইনসিকিওর ফিল করবে তখনই তারা ভারতে আসতে পারবে–।

সে যাহোক, তবে আমার কিন্তু মনে হয় একাত্তরের পরই সবচে বেশি মানুষ এসেছে এপারে, তখনই শহরটা ভরে গেছে আর তাইতো শহরতলিতে নতুন নতুন বসতির সৃষ্টি হল–।
কথাটা মনে রাখবেন পণ্ডিতজি, একাত্তরে শুধু বাংলাদেশ থেকে এতগুলো লোক আসেনি; আসাম, মিজোরাম, মনিপুর, নাগাল্যাণ্ড, ডিমা হাসাও ওসব জায়গা থেকেও দেদার লোক এসেছে বরাক উপত্যকায় শুধু নিরাপত্তার কারণে, আপনি ভালো করে একটু খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন–!
ঠিক আছে, তবে আমার কিন্তু আজকের এই সমস্যা দেখে আরেকটা কথা মনে হয়–।
কী কথা পণ্ডিতজি?
বাংলাভাষী যারা আসামে এসেছিল তারা যদি সবাই তখনই অসমীয়া ভাষা-কৃষ্টি একসেপ্ট করে নিত–।
একী কথা বলছেন আপনি পণ্ডিতজি, শুধু বেঁচে থাকার জন্য নিজের ভাষা সংস্কৃতি বিসর্জন দেবার কথা বলছেন?
ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্যই তো এদেশে আসা,নয়কি–?
অবশ্যই। তবে মূল ধারণায় আপনার ভুল হচ্ছে। দেশভাগ করা হয়েছিল দ্বিজাতিতত্ত্ব ভিত্তিতে। হিন্দুরা যেহেতু পাকিস্তানে থাকতে পারবে না তাই তাদের এদেশে নিয়ে আসার পরিকল্পনা হয়েছিল। ওদেশের হিন্দুরা তো আর ইচ্ছে করে নিজেদের জমি-মাটি-রুজি ফেলে এদেশে চলে আসেনি–!

অসমীয়ারা তো এদেশে আসা বাঙালিদের থাকতে বাধা দিচ্ছে না, শুধু বলছে ওদের ভাষা-সংস্কৃতি গ্রহণ করার কথা–!
মৃগাঙ্কমোহনের কথার পিঠে বলেন পণ্ডিতজি।
ওসব গ্রহণ করে অসমীয়া হয়ে যাওয়া, আত্মবিক্রি করা,নয় কি?
শুধু আসামেই নয় গোটা দেশেই তো কমবেশি বাস্তুহারার দল এসে বাস করার চেষ্টা করছে। দেশভাগের নামে একই রাষ্ট্রের একাংশ লোকের সঙ্গে যে অন্তর্ঘাত হয়েছে তার গুরুত্বটুকু বুঝতে হবে, উপলব্ধি করতে হবে–শুধু শুধু জাতি বিদ্বেষ দিয়ে এটা ঠেকানো সম্ভব নয়–!

Tags: পূর্ণাঙ্গ উপন্যাস
Previous Post

সাদাত হাসান মান্টো | দ্বিতীয় সংখ্যা

Next Post

আয়নামহল | তৃতীয় সংখ্যা

Daruharidra

Daruharidra

Next Post
আয়নামহল | তৃতীয় সংখ্যা

আয়নামহল | তৃতীয় সংখ্যা

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

No Result
View All Result

RECENT POSTS

সঞ্জয় চক্রবর্তী

সঞ্জয় চক্রবর্তী

08/02/2021
শংকরজ্যোতি দেব

শংকরজ্যোতি দেব

24/01/2021
ঠাকুরমার খাতা

ঠাকুরমার খাতা

16/01/2021
রবীন্দ্রনাথ ও বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী জনগোষ্ঠী : রাবীন্দ্রিক সম্পর্কের  একশো বছর | প্রথম পর্ব

রবীন্দ্রনাথ ও বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী জনগোষ্ঠী : রাবীন্দ্রিক সম্পর্কের একশো বছর | প্রথম পর্ব

08/01/2021
মনোজমোহন চক্রবর্তী | দ্বিতীয় সংখ্যা

মনোজমোহন চক্রবর্তী | দ্বিতীয় সংখ্যা

05/09/2020

পলিয়ার ওয়াহিদ | তৃতীয় সংখ্যা

05/09/2020
পার্থজিৎ চন্দ | তৃতীয় সংখ্যা

পার্থজিৎ চন্দ | তৃতীয় সংখ্যা

03/09/2020
বিশ্বজিৎ | তৃতীয় সংখ্যা

বিশ্বজিৎ | তৃতীয় সংখ্যা

03/09/2020
সঞ্জয় চক্রবর্তী | তৃতীয় সংখ্যা

সঞ্জয় চক্রবর্তী | তৃতীয় সংখ্যা

03/09/2020
রজার রবিনসন | তৃতীয় সংখ্যা

রজার রবিনসন | তৃতীয় সংখ্যা

03/09/2020

RECENT VIDEOS

https://www.youtube.com/watch?v=77ZozI0rw7w
Daruharidra

Follow Us

আমাদের ঠিকানা

দারুহরিদ্রা
কুঞ্জেশ্বর লেন
(বরাকভ্যালি একাডেমির নিকটবর্তী)
নতুন ভকতপুর, চেংকুড়ি রোড
শিলচর, কাছাড়, আসাম
পিন-788005

ডাউনলোড করুন

সাবস্ক্রাইব

Your E-mail Address
Field is required!
Submit
  • আমাদের সম্পর্কে
  • লেখা পাঠানো
  • যোগাযোগ

Copyright © All rights reserved Daruharidra | Development by Prosenjit Nath

No Result
View All Result
  • ধান্যগৃহ
  • কবিতা
  • গল্প
  • গদ্য
  • প্রবন্ধ
  • উপন্যাস
  • সাক্ষাৎ পাতা
  • অনুবাদ পাতা
  • আর্কাইভ
  • আমাদের সম্পর্কে
    • লেখা পাঠানো
    • যোগাযোগ

Copyright © All rights reserved Daruharidra | Development by Prosenjit Nath