আমার ঠাকুরমা মৃণালিনী দত্ত (নাগ) ছিলেন লাখাইর দত্ত বংশের বিখ্যাত আইনজীবী মহেশচন্দ্র দত্ত ও মোহনমালা দত্তের দ্বিতীয়া কন্যা। শিলচরের মিশন গার্লস স্কুল (বর্তমানে শিলচর সরকারি উচ্চতর বহুমুখী বালিকা বিদ্যালয়) এ পড়াশোনা করতেন। তিনি সেই স্কুলের স্বনামধন্য দুই ইংরেজ শিক্ষিকা মিস লয়েড ও মিস ইভানসের স্নেহভাজন ছিলেন। আজ থেকে শতবর্ষেরও বেশি সময় আগে সেই বিদ্যালয়টি প্রকৃত অর্থেই বহুমুখী ছিল। পড়াশোনার বাইরেও সেলাই ও বিভিন্ন ধরনের হাতের কাজ শেখানো হত। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন তিনি ছাত্রবৃত্তি লাভ করেন ও পুরস্কার হিসেবে একটি সেলাই মেশিন পান। ইংরেজ শিক্ষিকাদের থেকে তিনি লেস তৈরি করা, ক্রসটিচ এর কাজ, উল বোনা, এমব্রয়ডারি ইত্যাদির শিক্ষা পান। স্কুলে পড়াকালীন তেরো বছর বয়সে সিলেটের মুরারি চাঁদ কলেজের গ্রন্থাগারিক উপেন্দ্র চন্দ্র নাগের সাথে তাঁর বিবাহ হয়ে যায়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাতে ছেদ পড়লেও স্বামীর উৎসাহে তিনি বাড়িতে বিভিন্ন বই পড়তেন। বিবাহের পর সিলেটে গিয়ে তিনি সাংসারিক দায়িত্বের বাইরেও একটা মহিলা সমিতি পরিচালনা করতেন এবং একটি পত্রিকাও প্রকাশ করেছিলেন। শুনেছি যে তাঁর প্রথম পুত্রের জন্মের খবর পেয়ে তাঁর ইংরেজ শিক্ষিকারা মোজা, জামা, টুপি, ইত্যাদি বানিয়ে দিতেন। ১৯৬৫ সালের জুলাই মাসে তিনি পরলোকগমন করেন।
পুরনো নথি ঘাটতে গিয়ে তাঁর একটা খাতা পেলাম। তখন তিনি সেই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। সাল ১৯১৩ ইংরেজি। তখন তাঁর বয়স বারো বছর। সেই বয়সেই তিনি কাগজ কেটে কেটে নানা রকম ডিজাইন তৈরি করেছিলেন যেগুলো তাঁর শিল্প নৈপুণ্যের সাক্ষ্য বহন করে। বেশ কয়েকটি ডিজাইনের মধ্যে কয়েকটি আপনাদের সাথে ভাগ করে নিলাম।
Oshadaron