১.দারুহরিদ্রা– আসুন, আসুন অমিতাভ দা… বসুন।
অমিতাভ দেব চৌধুরী— বাহ্, দিব্যি রেস্তোরাঁ তো! ভাস্কর চক্রবর্তীর আইডিয়া ধার করে বানানো মনে হচ্ছে? বেশ বেশ । অবশ্য আমি এই সাক্ষাৎকারের যোগ্য কিনা তা নিয়ে আমারই মনে প্রশ্ন আছে। এমন অভ্যর্থনার যোগ্য একমাত্র দেবাশিস তরফদার। কিন্তু তিনি তো নিভৃতচারী। নির্জন শিল্পমগ্নতায় বিশ্বাসী। আমার জানামতে মাত্র, হ্যাঁ, মাত্র তিনবার পাঠকের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি, তাও নিজের লেখার পাঠকের মুখোমুখি নয়। একবার সত্যজিৎ রায়ের, একবার সৌরভ কুমার চলিহার, আর তিন নম্বরবার সাহিত্য পত্রিকার পাঠকদের মুখোমুখি। দেবাশিসদা, আমার বিচারে, ইতিমধ্যেই কালোত্তীর্ণ। একই সঙ্গে এত পাঠ-অভিজ্ঞতা, এত এত ভাষাজ্ঞান (বাংলা, অসমীয়া, ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ, সংস্কৃত) , নানারকম লেখার (গীতিকবিতা, দীর্ঘকবিতা, সনেট, ওড, অনূদিত কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, কিশোর সাহিত্য, জয়েস-কমলকুমার-বঙ্কিম গবেষণা) এত বিস্তার ও এত গভীরতা আমাদের আর কারও নেই ।
২.দারুহরিদ্রা— কেমন আছেন বলুন?
অমিতাভ দেব চৌধুরী—এমনিতে তো আছি সবকিছু নিয়ে থাকার মতই। পড়া (কম), লেখা (কম), গান শোনা, সিনেমা দেখা, আত্মচর্চা, পরচর্চা এসব নিয়ে। খালি ,মনে হয় , খুব তাড়াতাড়ি কোনদিন টুপ করে ঝরে যাবো। আগে এই ফিলিংটা কখনও হতো না।
৩.দারুহরিদ্রা— বাজে কথা ছাড়ুন। বছরখানেক ধরে তো আপনার সাথে আমাদের পরিচয়। সেই যে সুমন গুণ স্যার আপনার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ঘটিয়ে দিলেন, তারপর থেকে। রাজেশের সঙ্গে আপনার পরিচয় অবশ্য আরও আগে, অর্জুন চৌধুরী স্যারের মারফত। যাহোক, আমরা জানি যে আপনি এইমুহূর্তে আপনার আত্মজীবনী/স্মৃতিকথা লিখতে গিয়েও বারবার পিছিয়ে যাচ্ছেন। কেন জানি না, অনেক তোড়জোড় করেও শেষপর্যন্ত কিছু লিখছেনই না। বলতে গেলে ঠিক এই ব্যাপারটার জন্যই আগামী দীর্ঘদিন প্রতি বুধবার আপনার সাথে একটা হাওয়াই আড্ডা দেবো বলে ঠিক করেছি আমরা।
অমিতাভ দেব চৌধুরী— সে আমার পরম সৌভাগ্য। ছোটদের সঙ্গে আড্ডা দিতে সবারই ভালো লাগে। অন্তত নিজের বয়স কিছুটা কম মনে হয়।
৪.দারুহরিদ্রা— এটা নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই যে, আপনার সাথে আমাদের এই প্রতিসপ্তাহের আড্ডায় রীতিমত অনেক সময় কাটাতে যাচ্ছি আমরা। কিন্তু তার সাথে সাথে আমাদের এই আলাপচারিতার বিষয় যদি ভাগ করে নিই? তাহলে কেমন হয়? আপনি রাজি তো?
অমিতাভ দেব চৌধুরী— সে তোমাদের যেমন ইচ্ছে।
৫.দারুহরিদ্রা— এই ধরুন, প্রথম ভাগে থাকল আপনার আত্মজীবন কথা। আর দ্বিতীয় ভাগে আপনার কবি জীবনের নানান অলিগলি, মতামত।
অমিতাভ দেব চৌধুরী— ওকে।
৬.দারুহরিদ্রা— এবার তাহলে শুরু করি?
অমিতাভ দেব চৌধুরী— করো। কিন্তু এককাপ করে কফি হয়ে যাক আগে ।
৭.দারুহরিদ্রা— আপনার জন্ম?
অমিতাভ দেব চৌধুরী— আমি জন্মেছিলাম শিলং শহরে। গত শতাব্দীর ষাটের দশকের প্রথম দিকে। তখন শিলং ছিল রাজরানী। অবিভক্ত ও বিশাল আসাম রাজ্যের রাজধানী। বাবা শিলং লাইমোখরা পোস্টঅফিসের পোস্টমাস্টার ছিলেন। অনেকদিন শিলং যাইনি, শহরটির মানচিত্র ইতিমধ্যে নিশ্চয়ই অনেকটা বদলে গেছে। তাও একটু বুঝিয়ে দিই-
লাইমোখরা বাজারটা হাতের বাঁদিকে রেখে উপরের দিকে সেন্ট এডমান্ডস কলেজের দিকে সোজা উঠে গেলে হাতের ডানদিকে পড়ে সরু একটা গলি। নাম লেডি ভেরোনিকা পাথ (বানান ঠিক করে লিখবে)। অতটা না গিয়ে তার একটু আগে হাতের ডানদিকে ছিল সুন্দর ও ছিমছাম এক কাঠের বাড়ি। সেটাই পোস্টঅফিস কোয়ার্টার। আমার ছোটবেলা কেটেছে ওই কোয়ার্টারে। বাবা-মা, ঠাকুরদা-ঠাকুমা, পিসিমা-পিসেমশায় ও পিসতুতো দিদির দল, দাদামশায় ও দিদিমা, মাসিদের দল, মামাদের দল সবার কোলে চড়ে —– আনন্দের এক ঘূর্ণির মধ্যে। কে যেন বলেছিলেন, রবীন্দ্রনাথই তো ?—- তিনি যে খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন তা ওই আবছা আলোয় মাতৃগর্ভের অন্ধকারের একটা আদল খুঁজে পাবার জন্য।
আসলে আমাদের জন্ম তো হল স্মৃতিহীনতার এক সমুদ্র পেরিয়ে স্মৃতিদেশের ভেতর এসে ঢোকা। আর মৃত্যু হল, ওই স্মৃতিদেশ পেরিয়ে বিস্মৃতির দিকে চলে যাওয়া। আমার জীবনেও এখন সেই বিস্মৃতির সুর আর রং কোথাও একটা লাগছে-লাগবে টের পাচ্ছি। তাই অনেককিছুই আজকাল আর একটানা মনে রাখতে পারি না।
একেবারে শৈশবের শিলং-এর দুটো মাত্র স্মৃতি আমার মনে পড়ে। একটা উচ্ছ্বাসের, মাধুর্যের, নিবিড়তার; আরেকটা বিষাদের, নীরবতার— যদিও বিষাদ কী তা জানার বয়স আমার তখনও হয়নি। মাধুর্যের স্মৃতিটা এরকম— একটা মেলায় গেছি। অনেক পশরা, অনেক হৈ চৈ, অনেক আনন্দ, অনেক গান, অনেক রং ,অনেক অচেনা মানুষ, অনেক চেনা মানুষ। আমি এক কোল থেকে পালকের মতো অন্য কোলে এসে পড়ছি। আবার আরেকটা কোল আমায় কুড়িয়ে নিয়ে বুকে ঠাঁই দিচ্ছে। হয়ত চেতনার গহনে ওই মেলার স্মৃতি থেকে গেছে বলে মেয়েদের স্তন আমার কাছে সচরাচর নিভৃত মাতৃত্বেরও প্রতীক, একমাত্র যৌনতারই নয়। সে যাই হোক, মেলাটা কতক্ষণ চলছিল বা তারপর কী হয়েছিল, আমরা কখন কীভাবে বাসায় ফিরেছিলাম সেসব কিছুই মনে পড়ে না। শিলং-এ সত্যিই সে সময় এরকম কোনও মেলা হত কিনা তারও কোনও খোঁজ আমি কখনও নিইনি। হতে পারে, পুরোটাই আমার বানানো। পুরোটাই এক চামচ মনের মধু। তবে ওই মেলার একটা হালকা আদল আমি পরবর্তী জীবনে, আমার বিশ্ববিদ্যালয়-জীবনে, আমার গান-শোনার দামাল দিনগুলোয় খুঁজে পেয়েছিলাম সাইমন ও গারফাঙ্কেলের একটি গানে। সে গানটির নাম স্কারবরো ফেয়ার ।
দ্বিতীয় স্মৃতিটা এরকম। আমি বিছানায়। মা সম্ভবত ভাতের থালা হাতে ভাত খাইয়ে দিচ্ছেন আমাকে। বিছানার ওপাশে একটা জানালা। জানালার বাইরে গাছপালায় ঘেরা বেশ বড়ো একটা মাঠের মতো। অনেক দূরে দেখতে পাচ্ছি একটা মিছিল। সে মিছিল ,অবনতমস্তক, একটা বড় বাক্স (আসলে কফিন) বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ মাটি খুঁড়ছিল। আর কিছু মনে নেই।
এগুলো বানানো নয়। মানুষ সবকিছু বানাতে পারে। কেবল জীবন ছাড়া। আজ অস্তাচলের কাছে এসে পূর্বাচলের দিকে তাকালে মনে হয় আমার শৈশব আমার পরবর্তী জীবনের দুটি রাস্তা—- জীবনের আতিশয্য ও মৃত্যুর আঘাত তখনই নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল।
৮.দারুহরিদ্রা— আপনারা তো সিলেটিই?
অমিতাভ দেব চৌধুরী— বললে চমকে যাবে না তো? আমি আসলে বাঙালি নই। মানে আমার মা বাঙালি, বাবা বাঙালি, কাকা বাঙালি, জ্যাঠা-মামা-মাসি বাঙালি, গুষ্টিশুদ্ধ সবাই বাঙালি। কিন্তু পিতৃকুলের ইতিহাসমতে আমরা রাজস্থানী। সেই কোন স্মরণাতীত কালে আমাদের কোন পূর্বপুরুষ নাকি নিষ্কর জমির লোভে সিলেট এসেছিলেন। তারপর থেকে আমরা বাঙালি। ততদিনে সেই নিষ্কর জমিও আর করহীন হয়ে থাকেনি। আসলে সিলেটে শাহজালাল আসার আগে এবং পরে প্রচুর অ-সিলেটি বিভিন্ন কারণে এসে বসতি স্থাপন করেন, যেভাবে পৃথিবীর প্রতিটি ভূ-খণ্ডে মানব-প্রব্রজন ঘটে থাকে। নীচে আমি, তোমাদের সাহায্য নিয়েই, এক অবাঙালি শব্দসম্ভার উপস্থাপিত করছি– আকল ,বেজান ,শরম ,বহুত ,দিমাগ ,দিলদার, বেটা ,বেটি ,ছোকরা ,ছুকরি, বদমাইশ, গু (সম্ভবত বিহারীদের ‘গো’ -র সিলেটিকরণ, গো মানে ‘টি’), বাজু, দরদ, গতর, পাক (রান্না), চুলা, কাম(কাজ অর্থে), ভেন্ডি, আনাজ, মজদুরি, জাজিম, খাটিয়া, জমানা, রুজি, জিগর , জবর, হরদম, জিন্দেগি, দিল, চাক্কু, দুনিয়া, হারামি, চশম, নিমক, ডর, কিচ্ছা, কুরসি, জিন্দা, মুশকিল, নবিশ, খেল, বরবাদ, দরবার, জখম, ইনাম, লোটা, কলিজা, আচানক, জ্যায়সে ত্যায়সে (জেছা তেছা), মালুম, থুরা, নসীব, হালচাল, গলতি, জবান(কথা দেওয়া অর্থে), বারিষ, বাহাদুর, গুজর/গুজরান, বদন— এই শব্দগুলো আমরা সিলেটি বা ভূমিপুত্র বরাকবাসীরা কথায় কথায় ব্যবহার করি। খেয়ালই রাখি না, এগুলো আসলে বাংলা শব্দ নয়। এই শব্দগুলোর বেশিরভাগটাই এসেছে সম্ভবত শাহজালালের পরের যুগে। হয়ত কোনও কোনও শব্দ এর আগেও সিলেটিতে নিজের উপস্থিতি ঘোষণা করেছিল। অর্থাৎ বিভিন্ন প্রদেশের হিন্দিভাষীরা হয়ত সিলেটে বহুদিন ধরেই বসবাস করছিলেন। তাই তাদের ব্যবহৃত শব্দের কোনও কোনওটি ঢুকে পড়েছিল সিলেটি উপভাষায়। তারা এভাবেই সিলেটকে নিজের দেশ বানিয়ে নিয়েছিলেন, সিলেটি হয়ে গিয়েছিলেন, বাঙালি হয়ে গিয়েছিলেন, আমরা ও তাই। মানুষ যেখানে জন্মায় সেটাই যে তার দেশ হয়ে উঠবে— এমনটা তো নাও হতে পারে। তাহলে শিলং কেন আমার দেশ হল না? মানুষ যেখানে থাকে, সেটাই তার দেশ। তবে এখনও মাঝেমাঝে বুকের ভেতর জেগে ওঠে রাজস্থান। মনে হয় আমিও যেন জাতিস্মর। মুকুলের মতো। কেন যে সত্যজিৎ রায় কলকাতার মুকুলকে রাজস্থানেরই জাতিস্মর বানিয়েছিলেন তা জানি না। তবে সত্যজিৎ রায়ের মতে, ভারতের শ্রেষ্ঠ লোকসঙ্গীত রাজস্থানেই গাওয়া হয়। আমি নিজেও দেখেছি, রাজস্থানের লোকগান কী অদ্ভুতভাবে প্রায়শই শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মুন্সিয়ানার সঙ্গে মিশে যায়। এত নানারকমের লোকবাদ্যযন্ত্র অন্য কোনও ভারতীয় প্রদেশে আছে বলে আমার জানা নেই। অবশ্য বিপুলা এ দেশের কতটুকুই বা জানি ?
গানের টান রক্তের টানের চেয়েও বড়। রাজস্থানের লোকগীতি শুনলে আমি পাগল-পাগল হয়ে যাই। আমার এই বিপত্নীক জীবনের নবলব্ধা ইউটিউব-প্রেমিকাটি অতি ক্ষুদে, মাত্রই বারো বছরের। তার নাম বেবী আকাঙশা রাও। মীরার একটি ভজনের মাঝে কী অসামান্য সরগম যে সেদিন শোনালো— ভাবা যায় না! আর কেশরীয়া বালাম? আহা! তার গাওয়াটা আর মেহেদী হাসানের গাওয়াটা পাশাপাশি শুনে দেখো! জীবন ভরে উঠবে।
বেবী আকাঙশার গান
মেহেদী হাসানের গান
মুগ্ধতা শুধু মুগ্ধতা। শ্রদ্ধা এমন প্রতিভাকে যিনি আমাদের অজ শিলচরে আমাদের মতো অতি সাধারণের সঙ্গে সাধারণের মতোই বসবাস করেন। আশ্চর্য প্রতিভাকে ধারণ করে আছেন অথচ শিলচরের সাহিত্যজগত তাঁকে সেভাবে চিনল না এটাই আক্ষেপ। দারুহরিদ্রাকে ধন্যবাদ জানাই এই হাওয়াই আড্ডাকে ধরে রেখে আমাদের কাছে পৌঁছে দেবার জন্য। অপেক্ষা …
আপনাকে ধন্যবাদ! ভালো থাকুন…সাবধানে থাকুন!
অমিতাভদা র সংগে আমার পরিচয় থাকলেও তিনি কেমন যেন অধরা থেকে যান। আশা করি অমিতাভ দা কে এবার পুরোপুরি জানতে পারবো। আপনাদের ধন্যবাদ
অমিতাভর একটা ইন্টারভিউ আমি করব।
এক টানে পড়ে ফেললাম। দারুণ!
বেশ ভালো আলাপ। বিস্তারের অপেক্ষায়। চমৎকার গদ্যভঙ্গি। রাজস্থানের তথ্য তো আমাকে বলোইনি কোনোদিন। হাইরোডে ১৯৯৩ থেকে আমাদের কত আড্ডা!
দারুহরিদ্রাকে ধন্যবাদ এত সুন্দর এক আলাপ তুলে ধরার জন্যে। পরবর্তী কিস্তির অপেক্ষায় থাকবো
অন্য অমিতাভদাকে জানলুম।
এবার থেকে তোমার মধ্যে রাজস্থান খোঁজার গোপন অভ্যাস হয়ে গেল।
ভাল থেকো কবি
বিস্মৃতি অনেক দূরে।
মহাজীবনের পরিক্রমা চলুক।
আমরা আছি অনুরাগীরা।
🌹❤️
শিশিরকণা নেই I শিশিরকণার শিলংও আজ নেই I বছর দুই পূর্বে ফেলে আসা পাহাড়তলীতে গিয়ে মনে হয়েছিল , এই শিলংকে ত আমি চিনি না, এই শিলঙে ত আমি বড় হয়নি … ওয়ার্ডস লেকের ধার ঘেঁষে হেঁটে যাবার সময় হঠাৎই চোখে পড়ল লেক চত্বরে সরলভাবে দাঁড়িয়ে থাকা সেই সরল গাছটির উপর I যৌবনের অবুঝ মনে সবুজ স্বপ্ন দেখার সাক্ষি সে I আজ গাছটির বয়স বেড়েছে, আমারও I দেখি গাছটির ছায়ায় আমাদের স্বপ্ন বুনার পরিসর ছেয়ে গেছে ফর্গেট-মি-নট গাছে I থোকা থোকা ফুল যেন বলতে চাইছে ‘আমায় ভুলো না’ … অমিতাভ দেব চৌধুরীর সাক্ষাৎকার প্রথম কিস্তি খুব উপভোগ করলাম … দারুহরিদ্রায় প্রকাশিত লেখাগুলি নিয়ে আগামীতে বই প্রকাশ করার কথা ভেবে দেখতে অনুরোধ করছি I
একটা সাক্ষাৎকার যে একজনকে চেনার, জানার তাঁর অভিজ্ঞতা, চিন্তার হাত ধরে কতো ভাবনার দিক খুলে দেয়। অপূর্ব এই পরিকল্পনাটির জন্য দারুহরিদ্রাকে ধন্যবাদ। পড়তে পড়তে মনে এলো স্কারবরো বেরানোর স্মৃতি। পৃথিবী সুস্থ হলে একদিন হয়তো অমিতাভ মামা-র সঙ্গে স্কারবরো মেলায় দেখা হবে। আপাতত ভাষা প্রেমিকের সাথে দেখা হোক রেস্তোরাঁয়।
‘সাক্ষাৎকার’ও কী এভাবে হু হু করে পড়ে ফেলা যায়, জানতুম না তো… চলুক চলুক, অমিতাভদা… দারুহরিদ্রাকে ধন্যবাদ…
পড়ছি।অসাধারণ বাচনভঙ্গি,আর ঐ জায়গায় যেখানে তিনি বলছেন,ওঁরা আসলে রাজস্থানী সেটাও এক চরম সত্য।আসলে আমরা কেউই বোধহয় সেই অর্থে বাঙালি নই।যেমন আমার কথাই যদি ধরা যায় আমরাও তো গুজরাট হয়ে উত্তর প্রদেশ হয়ে বিহার হয়ে পুববাংলায়।আর এখন আসাম হয়ে আবার হয়তো সেই উৎসেই চলে যাবো কয়েক প্রজন্ম পর।
এ এক অদ্ভুত প্রব্রাজনের ইতিহাস।অমিতাভ আমার প্রিয় কবি।বলতে গেলে আমাদের এই অভাগা উত্তরপূর্বাঞ্চলের যে কয়েকজন প্রকৃত কবি আছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ।হয়তো কালের জমাখাতায় আমাদের প্রজন্মের একমাত্র তিনিই টিকে থাকবেন।
অনেকানেক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা,সবাইকে।
অমিতাভ,
মেঘালয় পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে আমার বাল্যের দিন সাতেকের আবছা লাইমোখরায় আমাকে বেড়িয়ে নিয়ে এলে, খুব মজা পেলাম। তোমাকে ও ‘দারুহরিদ্রা’-কে ধন্যবাদ ও ভালোবাসা ‐‐- ফিফটি‐ফিফটি !
রাজস্থান নিয়েও জন্মান্তরের গন্ধমাখা দুটো কথা আছে,
পরে বলব তোমাকে। আরেকবার ওদেশে যাব, শক্তিদার কথায় “বন্ধু পেলে সঙ্গে …”।