শব্দে-সূত্রে
১.
জীবনে জড়পিণ্ড হওয়ার ভয়ে
দৌড়ে কাটিয়ে দিয়েছি চারিদিক,
তুমি হাত বাড়িয়ে ধরতে চেয়েছ
অথচ মুঠোয় পড়ে রয়েছে কিছু
উত্তর বিহীন সব উদ্ভট সূত্রেরা।
রাতে ভালোবাসি করেছি স্বীকার,
ভোরের আলোয় এসেছি বন্ধু হয়ে,
রাতের পর রাত, এবং পরের ভোর
শুধু পাল্টি ঝড়ের রূপ মেখেছি গায়।
কোনো জিনিসের ভর ও গতি দুটোকেই
পুরো মাপা যায় না – অনিশ্চয়তা সূত্র বলে,
শুধু সূত্র তোমাকে বলে যায় না কখনোই
জীবনই আসলে সবচেয়ে বড় অনিশ্চয়।
২.
রাতের আঁধারে যে তারা জ্বলছে,
জানবে তার আলো হাজার বছর
পুরোনো, ক্যালেন্ডার জানে সেকথা,
এতগুলো বছরের ক্লান্ত যাত্রাপথ
সেই আলো অতিক্রম করে এসেছে
আজ শুধু তোমায় ছুঁয়ে যাবে বলে।
হাজার বছর অপেক্ষায় তোমাকে পাবো,
এ স্বপ্নপূরণের জন্যে এক অনন্ত জীবন
সেজে থাকা যায় রাত জাগা তারা হয়ে।
৩.
এই মুহূর্তে আমি তোমার সামনে
দাঁড়িয়ে নাও থাকতে পারতাম,
এই মুহূর্তে তুমিও আমার সামনে
হয়ত না-ই থাকতে পারতে,
আমি ইলিশ মাছের হলদে গায়ে
কিছু ভাপ জমিয়ে রাখতাম,
তুমি স্নুকার টেবিলে তুলতে ঝড়।
তবু প্রবাবিলিটির সকল সূত্র
ঝেড়ে মুছে আমরা মুখোমুখি,
দুজনের মস্তিষ্ক ইতিহাসে এখন
টাইপ হচ্ছে এই অংকের উত্তর।
একটা বিজ্ঞান খাতা জীবনে শুধু
সংকল্পিত উত্তর মিলের চেষ্টা চলে।
৪.
তোমার চোখে যে মৃত্যু খেলা করে;
জানবে সে সেই পূর্বপুরুষের জিন-
যা মেনে চলেছে ঘড়ির কাঁটা ধরে
ডারউইন সাহেবের বিবর্তন তত্ত্ব।
বিজ্ঞান খাতার লেখা মেনে নিয়েই
তুমি এগিয়ে চলেছ পাতা ছিঁড়ে,
সন্তর্পনে তুলে ফেলেছ আগাছা।
এই কথা মনে পড়তেই আমি জানি
ঘরে নেমে এল এক পরিচিত স্তব্ধতা,
বাতিল বোঝাই ট্রাংকের তালা খুলে
আজ ন্যাপথালিন গন্ধ নেওয়ার দিন।
কমলিকা মজুমদার। জন্ম নভেম্বর, ১৯৮৬। শূন্য পরবর্তী সময়ের কবি। আসামের লামডিং শহরে জন্ম, বর্তমানে গুয়াহাটি শহরে কর্মরত ও স্থায়ী বাসিন্দা। প্রকাশিত বই: কুয়াশায় ভেজা টাইমলাইন (জানুয়ারি,২০১৭) ও উইদ লাভ, কমলিকা (ডিসেম্বর,২০১৮)
সুন্দর হয়েছে। অভিনন্দন ❤️
পড়লাম। মুগ্ধ হলাম।
একগুচ্ছ তাজা ফুল , কমলিকার কবিতা
বেশ লিখেছিস বনু
ভালো লাগল 💕💕 অভিনন্দন 💐
কবিতাগুলো ভাল লাগল।