এরমধ্যেই স্কুলে ক্যাম্পাস হলে একটি নাটক অভিনীত হল। রচনা ও নির্দেশনা মহাবীর চা-বাগানের সঞ্জয় বলে এক যুবকের। কোলকাতার ছেলে। সঞ্জয় সম্পর্কে একটি ফিসফিসানি ছড়িয়ে পড়েছিল। বাংলা ‘অভিমান’ সিনেমার শিশুশিল্পীটি নাকি সঞ্জয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই খবর চাউর করেছিল নগেন। সেই নাটকে অভিনয় করেছিল সজল, সহপাঠী দুই বোন কবিতা ও করবী। বাগানেরই জনৈক কর্মচারীর মেয়ে অনসূয়া। কমলেশ অভিনয় করেছিল বয়স্ক চাকরের ভূমিকায়। কমলেশের গলায় নাটকের একটি গান দর্শকদের মন কেড়েছিল খুব–
কোন শালা বলে আমায় চাষা
বাসা আমার রাজপুরীতে
আলুভাতে বেগুনপোড়া পান্তাভাতে ঘি…
অভিনয়ের ব্যাপারে সজল খুব একগুঁয়ে। মুখ্য চরিত্রের রোল না দিলে সে অভিনয় করতে চাইত না। সজল তখন থেকেই যাত্রাপালায়ও অভিনয় করত। তবে সে ছিল নাটক-অন্তপ্রাণ। কমলেশদের বাড়িতেও গানের পরিবেশ ছিল। ওর বোন রুপাও গান গাইত। নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার কয়েকদিন আগে করবীর সঙ্গে কিছু একটা নিয়ে সজলের তুমুল ঝগড়া। দুজনেরই স্বামী-স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয়। আমি খুব ঘাবড়ে গেছিলাম। এত ঝগড়ার পর নাটকের দিন দুজন স্বাভাবিক অভিনয় করতে পারবে তো? যদিও সেদিন দুজন বেশ ভালোভাবেই উৎরে গেছিল।
তখন ত্রিপুরা জুড়েই টিনএজার ছেলেদের বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার হিড়িক। হঠাৎই শোনা যেত, অমুক বাড়ির ছেলেটি পালিয়ে গেছে। হালাহালিতে আমরা যাওয়ার আগেই নাকি পালিয়ে গেছিল ফুটবলার প্রফুল্ল সিংহের ভাই অমূল্য। আমাদের সময় একদিন দুম করে পালিয়ে গেল দুর্গাপদ চৌধুরীর নাতি দেবাশিস ওরফে বাপি। আমাদের সহপাঠী অতুলও বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছিল। এই পালিয়ে যাওয়া ছেলেরা সাধারণত শিলং বা জোয়াই চলে যেত। টাকাপয়সা ফুরিয়ে এলে কেউ কেউ আবার বাড়ি ফিরে আসত। কেউ কেউ গিয়ে কোনো গ্যারেজে মোটর মেকানিক্সের কাজ শিখে দীর্ঘবছর নিরুদ্দেশ থেকে বাড়ি ফিরে আসত। কেউ কেউ খাসিয়া বা জয়ন্তিয়া মেয়েকে বিয়ে করে থিতু হত। কেউ আবার সেই বউ ছেড়ে পালিয়ে বাড়ি ফিরে এসে আবার নতুন করে বিয়ে করে সংসার শুরু করত। খাসিয়া, জয়ন্তিয়া সমাজ যেহেতু মাতৃতান্ত্রিক, এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা নিয়ে কোনো হইচই হত না। আমাদের বন্ধু রূপক দেবনাথ তো বেশ কয়েকবারই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছিল। আমাদের উজান অভয়নগর বাড়ির পাশেই ছিল নরেন্দ্র পালের চা স্টল ও টিফিনের দোকান। সকালে পরোটা সবজির দোকান। বেশ কয়েকটি ছেলে নরেন্দ্র পালের। এক ছেলে শঙ্কর হঠাৎই একদিন উধাও। দু-তিন বছর পর হঠাৎ একদিন মানি অর্ডারে কিছু টাকা আর চিঠি। আমি এখন গৌহাটি একটি হোটেলে থাকি। রান্নার কাজ করি। ইতি শঙ্কর। এরপর আবার কয়েক বছর পর টাকাসমেত শঙ্করের চিঠি। এক ফাইভ স্টার হোটেলে সে শেফ। এরপর চার / পাঁচ বছর যোগাযোগ নেই। হঠাৎই একদিন জার্মানি ত্থেকে প্রচুর টাকাকড়ি ও শঙ্করের চিঠি। জার্মানির এক টিম ইন্ডিয়ার সেই পাঁচতারা হোটেলে এসে উঠেছিল। শঙ্করের রান্না তাদের এতটাই পছন্দ হয়, শঙ্করকে এই টিম উড়িয়ে নিয়ে চলে যায় জার্মানিতে। এই শঙ্করের টাকায় নবদ্বীপে জায়গাজমি কিনে গোটা পরিবারটিই সেখানে থিতু হয়েছিল। হালাহালির প্রফুল্লদার ভাই অমূল্য তিন / চার বছর পর বাড়ি ফিরে এসেছিল। হালাহালির আরেকটি ছেলে পালিয়ে গিয়ে দীর্ঘবছর পর খাসিয়া বউ নিয়ে বাড়ি এসে থিতু হয়েছিল। তবে সেই বউ সে ধরে রাখতে পারেনি। মেয়েটি ফের চলে গেছিল মেঘালয়ে। তখন মণিপুরি ও বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি সমাজে যুবক যুবতির গান্ধর্ব বিবাহ বা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে খারাপ চোখে দেখা হত না। নিতান্তই অন্য জাতির সঙ্গে বা জ্ঞাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বা সমগোত্রে বিয়ে না হলে শাস্ত্রীয় মতে ব্রাহ্মণ ও আত্মীয়স্বজন ডেকে সামাজিকভাবে বিয়ে হত। মহাবীর চা-বাগানেও যুবক যুবতিদের প্রেম-ভালোবাসার বিয়ে হত। সামাজিকভাবে স্বীকারও করে নেওয়া হত। তবে বোনাজ সম্প্রদায় যেহেতু ওড়িয়া ব্রাহ্মণ, তাদের ঘরের মেয়েরা পালিয়ে গিয়ে অন্য সম্প্রদায়ের কাউকে বিয়ে করলে তাকে সমাজে আর গ্রহণ করা হত না। দশদিন পর সেই সমাজচ্যুত মেয়েটির শ্রাদ্ধ করা হত। কিন্তু বোনাজ কোনো ছেলে অন্য সম্প্রদায়ের মেয়ে বিয়ে করলে সেই মেয়েকে স্বীকার করে নেওয়া হত। তবে রান্নাঘরে ঢোকার অনুমতি পাওয়া যেত না।
কৃষ্ণ শর্মার মণ্ডপে মাঝেমধ্যেই মেয়েদের একটি খেলা চোখে পড়ত। লিকোন শান্নাবা। এটি মূলত মণিপুরি নারীদের খেলা। কাপড়ের তৈরি লুডোর ছকের মতো একটি যোগচিহ্ন। তাতে ঘর আঁকা। মণিপুরি ভাষায় এই কাপড়ের তৈরি ছকটিকে লায়ুম বলে। ঘুঁটি থাকত। আর ছক্কা হিসেবে কড়ি ব্যবহার করা হত। সেই ছ-টি কড়ি দু-হাতে বা কৌটোতে নিয়ে দান ছুড়ে মারা হত। কড়ি চিৎ হয়ে পড়ার উপর সংখ্যা নির্ধারিত হয়। একটি কড়ি চিৎ হয়ে পড়লে প বা কানা বা এক। দুটিতে দুরি। এভাবে তিরি। চৌকা। পাঞ্জা। আর সব কড়ি উল্টে পড়লে সাত। এই খেলা সারা বছর জুড়ে হলেও বৈশাখ মাসের নববর্ষ বা সাজিবু চেইরাউবার প্রথম পাঁচদিন খেলতেই হত। মণিপুরি নারীরা খেলার আসরে বসার আগে খুব সাজগোজ করে নিতেন। হারজিতের বাজি খিচুড়ি। যে পক্ষ হেরে যাবে, বিজয়ী পক্ষকে খিচুড়ি খাওয়াতে হবে। এই খেলাই বিয়ের আগের দিন কনেকে নিয়ে কনেপক্ষের যুবক-যুবতিরা খেলত। বিয়ের আগের দিন এই খেলার চল বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি সমাজেও আছে। তবে খেলার নাম ভিন্ন। নিকন নামেই প্রচলিত। এছাড়াও বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরিরা এই খেলা চৈত্রসংক্রান্তির সময়ও খেলে।
শ্রাবণের বিষহরি পূজা শেষ হওয়ার পরপরই ভাদ্রমাসের একাদশী থেকে আরেক পূর্ণিমা পর্যন্ত গোটামাসব্যাপী মহাবীর চা-বাগানে সাঁওতাল, মুন্ডা, বর্ধমানিদের করমপূজা। ধলাই নদীতে স্নান করে যুবক, যুবতিরা মাদলের তালে তালে গান গাইতে গাইতে বেতের টুকরিতে নদী থেকে বালি এনে ঘরের ভেতর লেপা-পোঁছা করে পরিষ্কার জায়গাটিতে টুকরিটি রেখে দেয়। সেই বালিতে কাঁচা মুগ, ছোলা, বুট, মটর, কলাই এবং আরও অন্যান্য শস্য যেগুলোর খুব দ্রুত অংকুরোদ্গম হয়, টুকরির বালিতে রেখে বালিচাপা দিয়ে এর উপর কলাপাতা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। রোজ সন্ধ্যা থেকে মাদলের তালে তালে নাচগানের আসর চলে একটানা রাত দশটা পর্যন্ত। করম পূজার একটি গান শুনেছিলাম–
আজ রে করম রাজা ঘরের দুয়ারে
কাল রে করম রাজা সাত নদীর পারে…
সন্ধ্যার সেই নাচগানে মেয়েরাই শুরুর দিকে বেশি থাকত। পুরুষেরা নেশা করে একটু রাতের দিকেই অংশ নিত। সাঁওতালদের ও মুন্ডাদের মাদল দেখতে এক নয়। সাঁওতালদের মাদল লম্বাটে ধরনের। মুন্ডাদের মাদল ছোটো। বর্ধমানিদের বড়ো ঢোল অনেকটা ঢাকের মতো। বর্ধমানিদের গান একটু দুর্বোধ্য বলে একে ফার্ছি বলা হয়। পশ্চিমবঙ্গে পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর অঞ্চলে করম পূজা মূলত কুর্মি সম্প্রদায়ের মানুষেরই উৎসব। পুজোর দিন করম গাছের কাছে ক্ষমা চেয়ে গাছে সিঁদুর মেখে গাছের ডাল কেটে নেওয়ার অনুমতি চাওয়া হয়। সেই ডাল ও পাতা দিয়ে উঠোনে কুঞ্জ সাজানো হয়। অন্যান্য চা-বাগান থেকে নিমন্ত্রিত আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবরা আসে। পরের দিন করম পুজার সেই ডাল পাতাসমেত সব নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয় এবং আগামী বছর করম পুজা করার সংকল্পও নেওয়া হয়। ফিরে এসে সবাই মিলে দুপুরের খাওয়া দাওয়া করে। মহাবীরের এই করম পূজা তখন থেকেই সর্বজনীন। এই পূজায় করম ও ধরম, দুই ভাইয়ের পৌরাণিক কাহিনি অঞ্চলভেদে একেক রকম। করম পূজা মূলত উর্বরতা, সর্বপ্রাণবাদ ও নতুন ফসল আবাহনের প্রতীক।
২১.
আমাদের হালাহালি স্কুল প্রথম শুরু হয়েছিল সহপাঠী জয়শ্রীর দাদু কুঞ্জবাবু সিংহের গোয়ালঘরে। এরপর কুঞ্জবাবু সিংহের দান করা বিশাল জমিতে প্রাথমিক বিভাগ শুরু হয়। এরপর ১৯৬১ সালে জুনিয়র হাইস্কুল হওয়ার পর স্থানান্তরিত হয় বর্তমান স্কুলের সামনে উঁচু জায়গায় উত্তর-দক্ষিণে তৈরি একটি ঘরে। টিচার ইনচার্জ ছিলেন ইন্দ্রমোহন সাহা। শিক্ষকসংখ্যা খুবই কম। হামিদ মিঞা। সুখরঞ্জন নন্দী। সুবিমল চক্রবর্তী। কয়েক বছর পরে বদলি হয়ে আসেন গুণমণি সিংহ। শিক্ষক স্বল্পতার জন্যে জুনিয়র হাইস্কুলে শিক্ষকদের তখন সিক্স টু এইট টানা ক্লাস করতে হত। বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। এদিকে কুঞ্জবাবু সিংহের দান করা জায়গায় প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষক স্বল্পতা। বড়বাবু কালীপদ চৌধুরীর বড়ো মেয়ে বাসন্তী সদ্য মেট্রিক পাস করেছেন। হালাহালির স্থানীয় লোকেরা অনেকেই কালীপদ চৌধুরীকে সোনাদ্দা বলে ডাকতেন। শিক্ষক বীরেন্দ্র কিশোর সিংহ সহ কয়েকজন অভিভাবক গিয়ে কালীপদ চৌধুরীকে অনুরোধ করলেন বাসন্তী যেন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা হিসেবে জয়েন করেন। পড়াশোনা শেষ না করে মেয়েকে চাকরি জয়েন করার অনুমতি দেওয়ার ইচ্ছে না থাকলেও তাঁদের কাতর অনুরোধ ফেলতে পারেননি। তখন ত্রিপুরাতে শিক্ষকতার চাকরি পাওয়া কঠিন কিছু ছিল না। যদিও পরে বাসন্তী চৌধুরী প্রাইভেটে পরবর্তী উচ্চশিক্ষা সম্পূর্ণ করেছিলেন। সুবিমল চক্রবর্তীর সঙ্গে বাসন্তীদির বিয়েও হয়েছিল। এখন যেখানে স্কুল, সেই জায়গাটি ছিল পদ্মবিল। সামনের দক্ষিণপূর্ব অংশ জুড়ে জলাভূমি। পশ্চিমে টিলা। জলায় পদ্মফুল ফুটে থাকত বলেই পদ্মবিল নাম। স্কুলের এই জায়গা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। তখন বেশ কিছুটা জমিই ছিল খাসজমি। কারো কারো মতে এই জায়গা দান করেছিলেন কুঞ্জবাবু সিংহ। স্থানীয় করুণা সিংহের দাবি, এই জায়গা নাকি তার বাবা রাজমোহন সিংহ স্কুলকে দান করে গেছেন। স্থানীয় পুরোনো বাসিন্দারা বলেন, রাজমোহন যখন বাংলাদেশ পূর্ব পাকিস্তান থেকে হালাহালিতে চলে আসেন, এই জায়গায় তাঁদের বাড়িঘর বানানোর জায়গা দেওয়া হয়েছিল। পরে স্কুল তৈরির সময় স্কুলের পাশেই তাঁদের বিকল্প জায়গার বন্দোবস্ত হয়েছিল। কাজেই এই দাবি ধোপে টেঁকে না। কেউ কেউ বলেন, এই জায়গা নাকি স্কুলের উল্টোদিকের গোপাল দত্তের প্রতিবেশি কুসুম সিংহের। অধিকাংশের মতে স্কুলের অনেকটা জায়গাই কেনা হয়েছিল মেইপা খয়তুংবুড়ার শাশুড়ি খনাবুড়ি ও তমাল সিংহের পূর্বপুরুষ থেকে। খনাবুড়ির তখন প্রচুর জমিজিরেত। তিন মেয়ের মধ্যেই এই জমি খনাবুড়ি বাটোয়ারা করে দিয়েছিলেন। স্কুল হওয়ার আগে স্থানীয় ছাত্র ও যুবকেরা শ্রমদান করে রাস্তা তৈরি ও বিডিও-র জিপে করে দুরাইছড়া শিববাড়ি থেকে বিল্ডিং তৈরির ইট, বালি, সিমেন্ট নিয়ে আসত। বেশ কয়েক বছর পর সরকারি সিদ্ধান্ত হয়, স্কুলটিকে হাইস্কুলে উন্নীত করে সালেমাতে সরিয়ে নেওয়া হবে। সবার মাথায় যেন বাজ ভেঙে পড়ে। শচীন্দ্রলাল সিংহ তখন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। তখন হালাহালির গ্রামপ্রধান ব্রজ সিংহ। দেবীছড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন বাবুলোক সিংহ। শচীন সিংহ তখন প্রায়ই দেবীছড়া আসতেন। খোয়াই মহকুমার কল্যাণপুরের দ্বারিকাপুরের মতোই দেবীছড়াও ছিল কংগ্রেসের ও শচীন সিংহের বিশ্বস্ত নিরাপদ ও বিশ্বস্ত ঘাঁটি। দেবীছড়া, হালাহালি, বড়লুৎমা; তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতই তখন কংগ্রেসের দখলে। বাবুলোক ও ব্রজ সিংহের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বেশ দহরম মহরম। লুৎমার গ্রামপ্রধান তখন থংবাবু সিংহ। গভীর রাতে হ্যাজাক জ্বালিয়ে হালাহালির প্রধান ব্রজ সিংহ, চিত্র স্যার, বীরেন্দ্র কিশোর সিংহ, থংবাবু সিংহ, পুব মণ্ডপের পুরোহিত নাগেশ্বর চ্যাটার্জি, রাধারমণ স্যার ও আরও বেশ কয়েকজন নদী পেরিয়ে দেবীছড়া ছুটে যান বাবুলোক সিংহের বাড়িতে। কীভাবে সরকারি এই সিদ্ধান্ত পাল্টে হাইস্কুল হালাহালিতেই রাখা যায়। মিটিংয়ের পর সেই রাতেই জিপ ভাড়া করে আগরতলায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ছুটে যান বাবুলোক সিংহ। সরকারি সিদ্ধান্ত পাল্টে স্কুল হালাহালিতেই থেকে যায়।
বেশ লাগছে ।
বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া আর কোনো কিছুর সন্ধানে মোহিত হয়ে, সেটির অন্বেষায় বেরিয়ে পড়া______ এই দুইয়ের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। রাগে অভিমানে অনেকেই বেরিয়ে যায়, তাদের মধ্যে কয়েকজন বা অধিকাংশই বাড়ি ফিরে আসে। স্বপ্নের সন্ধানে যারা বাড়ি থেকে যায় তারা চিরতরে যায়। আর বাড়ি ফিরে এলেও স্বপ্ন খানি বার বার ওদের বহির্মুখী করে তোলে। বাড়িতে থেকেও ওরা বাড়িতে থাকে না। হয়তো মনের কোনো এক প্রান্তে স্বপ্ন ফেরী করার ইচ্ছে টুকু তার রয়েই যায়। চেয়েছিলাম অতীত জীবন টুকু মৌনই থাকুক। একান্তই নিজের হয়ে। কিন্তু মৌনতা ভাঙ্গতে হলো….. ।
শুভেচ্ছা বন্ধুবর
রূপক দেবনাথ
সময়ের নিখুঁত ডকুমেন্টেশন
তার মানে, দেবাশিস তরফদারের কিশোর উপন্যাস ‘শিলং দূরে নয়’-এ যে দুটি কিশোর বাড়ি থেকে পালিয়ে শিলং গিয়েছিল, তা আসলে ছিল ওই সময়-পরিসরের বাস্তবতা ।
দারুণ !!