কয়েক মাস হয়ে গেছে ১৯৮৩-র ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয় বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় এসেছে। কমলপুর মহকুমায় মোট চারটি আসন। সুরমা কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থী হরেন্দ্র দাসকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন বামফ্রন্টের রুদ্রেশ্বর দাস। কমলপুর কেন্দ্রে বামফ্রন্টের বিমল সিংহের কাছে হেরে গেছেন কংগ্রেসের সরোজ চক্রবর্তী। সালেমা কেন্দ্রে বামফ্রন্টের দীনেশ দেববর্মা হারিয়ে দিয়েছেন উপজাতি যুবসমিতির বিজয় জমাতিয়াকে। কুলাই কেন্দ্রে উপজাতি যুবসমিতির দিবাচন্দ্র হ্রাংখল বামফ্রন্টের কামিনী দেববর্মাকে হারিয়ে জয়ী বয়েছেন। নির্বাচনের সময় সি পি আই এমেরই যা তোড়জোড়। নির্বাচনের কয়েক মাস আগে হঠাৎই হালাহালি বাজারে এক সন্ধ্যায় সি পি আই এমের জঙ্গি মিছিল। কুলাইয়ের কাছে কোথাও নাকি দশরথ দেবের উপর আক্রমণ সংঘটিত করা হয়েছে। পরদিন জানা গেল খবরটি ভুয়ো। বিরাশির ডিসেম্বরে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি এসেছিলেন এয়ারপোর্ট সংলগ্ন সমাবেশে। দূরদূরান্ত থেকে নারীপুরুষেরা এসেছিলেন ইন্দিরা গান্ধিকে দেখতে। সহপাঠী বন্ধুদের সঙ্গে হেঁটেই গেছিলাম সেদিন। হালাহালি-কমলপুরের রাস্তায় তখন সারাদিনে হাতে গোনা কয়েকটি গাড়ি। চারদিক হাওয়ায় উড়িয়ে হেলিপ্যাডে ল্যান্ড করেছিল প্রিয়দর্শিনীর কপ্টার। মঞ্চে উঠে সংক্ষিপ্ত ভাষণের পর দু-পাশে দুই প্রার্থীর হাত তুলে ধরে প্রার্থীদের আসন্ন নির্বাচনে জয়ী করার আর্জি জানিয়েছিলেন শ্রীমতী গান্ধি। যদিও শেষরক্ষা হয়নি।
একদিন ছুটির সকালে ধীরেন্দ্র ডাক্তারের ফার্মেসির সামনে দাঁড়িয়ে আছি। কয়েকজন পশ্চিমা যুবক কাঁধ থেকে মোটা বাঁশে ঝোলানো ত্রিপলের একটি চাঙ্গারি নামিয়ে রাখল। দুর্গম এলাকা থেকে অসুস্থ বা মুমূর্ষু রোগীকে চাঙ্গারিতে বয়ে হালাহালি প্রাইমারি হেলথ সেন্টারে নিয়ে আসা হত। তাদের মুখ থমথমে। দোলাটির পাশের খোলা অংশ দিয়ে উঁকি দিতেই দেখি, বছর পঞ্চাশের কালো মতো এক লোক শুয়ে আছে। কোঁচকানো চোখেমুখে তীব্র যন্ত্রণার ছাপ। পেট থেকে রক্তমাখা নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে এসেছে। মুহূর্তেই মাথা ঝিমঝিম করে উঠল। শরীর বমি বমি। বড়ি ফিরে গেলাম। দুপুরে ও রাতে কিছুই খেতে পারিনি। থেকে থেকে মনে পড়ছে যন্ত্রণাক্লিষ্ট লোকটির মুখ। খুনখারাপির ঘটনা খুব একটা শোনা যেত না হালাহালিতে। এর আগে ১৯৮২-র ১৬ জুলাই কুলাইতে তিনটি রাজনৈতিক খুন হয়েছিল। চিত্ত দেব, চিত্ত দেবনাথ, জয়চাঁদ দেবনাথ নামে আমরা বাঙালি দলের তিন সক্রিয় সদস্যকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছিল বামপন্থী কিছু সমর্থক। ১৯৮১তে দেবীছড়ার দয়াময় দত্তের খুনের ঘটনা গোটা মহকুমাকে স্তব্ধ করে রেখেছিল। কে বা কারা রাতের অন্ধকারে গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারবার আঘাত করে তাঁকে বাড়িতেই খুন করে রেখে গিয়েছিল। দয়াময় দত্ত ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। বিয়ে থা করেননি। পরিবারে বাবা মা আর ভাইবোন। গোটা দেবীছড়া ও হালাহালি এই ঘটনায় মুষড়ে পড়েছিল। খবর পেয়েই ছুটে এসেছিলেন নর্থের এস পি। কমলপুর তখন উত্তর ত্রিপুরা জেলার অধীনে। দুদিন পরেই সমন্বয় কমিটির ডাকে হালাহালিতে একটি মৌন শোকমিছিল বেরিয়েছিল। দয়াময় দত্তের মৃত্যুর পর সেই পরিবারে ভাই কৃপাময়কে সরকারি চাকরি দেওয়া হয়েছিল। এই খুনের যথারীতি আর কোনো কিনারা হয়নি।
কমলপুর-আমবাসা রোডে রাস্তার দু-পাশেই নাকফুল গ্রাম। নাকফুল জুনিয়র বেসিক স্কুলের পর নাকফুল-ছড়ার উপর ছোট্ট ব্রিজ পেরিয়ে গ্রামের শুরু। এই ছড়াটি অপরেসকরের কোনো পাহাড়ি ছোটো প্রপাত থেকে বেরিয়ে জনপদের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়ে ধলাই নদীতে গিয়ে মিশেছে। লুৎমা যাওয়ার পথে দীনবন্ধু দাসের বাড়ির পাশে ছোট্ট ব্রিজ পর্যন্তই নাকফুল গ্রামের সীমানা। গ্রামের পূর্বদিকে ধলাই নদী। ত্রিপুরাতে রাজন্য আমলের সবচেয়ে ছোটো মৌজা ছিল নাকফুল। কেউ কেউ বলেন, নাকের ফুলের মতো ছোটো মৌজা বলে গ্রামটির নাম নাকফুল। একসময় নাকফুল ছিল জঙ্গলাকীর্ণ। নাকফুলের বেশিরভাগ জায়গারই মালিক ছিলেন যোগেশ চন্দ্র দাস। সিলেট ও হবিগঞ্জ থেকে লোকজন এসে যোগেশ দাসের কাছ থেকে জায়গা কিনে বসবাস শুরু করেন। নাকফুলের কালীবাড়িটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৬৬ সালে। এই মন্দিরের জন্যে জায়গা দান করেছিলেন যোগেশ চন্দ্র দাস। মন্দির কমিটির সভাপতি ছিলেন তিনি। সচিব ছিলেন নাকফুলের তরণী কান্ত দত্ত। কমিটির সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মদন শীল, ফণী রক্ষিত, কুসুম দেববর্মা, পরেশ বণিক, বিনোদ কান্ত সিংহ, জ্যোতির্ময় দেব, যোগেন্দ্র সিংহ ও আরও কয়েকজন। মন্দিরের প্রথম পূজারি ছিলেন বিপিন ভট্টাচার্য। নাকফুলে সুভাষ বিশ্বাসদের বাড়ির সামনে একটি ভৈরবের থলি বা থান আছে। পুরোনো বাসিন্দাদের অনেকেই নাকি কাকভোর হওয়ার আগে সেই ভৈরবের থলিতে পরিদের গান শুনতে পেতেন। নাকফুলের পশ্চিমে নাকাসি পাড়ার রাস্তা। কুসুম দেববর্মা ও বিক্রম দেববর্মার বাবা নাকাসি চৌধুরীর নামেই এই পাড়ার নাম। আগে গ্রামের উপজাতি মোড়লদের চৌধুরী বলা হত। গোটা গ্রামেই চৌধুরীদের প্রভাব প্রতিপত্তি থাকত। নাকাসি চৌধুরীর বাবা ঈশ্বর চৌধুরীর এই ছোট্ট তালুক ছিল। বিনিময়ে ত্রিপুরার রাজাকে কর দিতে হত। নাকাসিও রাজাকে কর দিয়ে আসছিলেন। পারিবারিক এই সামন্ত প্রথাকে আস্তে আস্তে ভেঙে দিচ্ছিলেন তিনি। একবার তীব্র খরায় আশেপাশের গ্রামের ক্ষুধার্ত উপজাতি লোকজন নাকাসি চৌধুরীর ধানের গোলা লুটপাট করতে এসেছিলেন। খবর পেয়ে নিজেই খুলে দিয়েছিলেন সেই মজুত। গ্রামের উন্নতি, প্রতিবেশীদের আপদে বিপদে পাশে থাকার কারণে লোকজনের কাছেও জনপ্রিয় ছিলেন নাকাসি চৌধুরী। বাংলাদেশ থেকে আসা কিছু গোয়ালা পরিবারকেও জায়গা দান করে গ্রামে বসিয়েছিলেন। সেই পরিবারগুলোকে সাহায্য সহায়তা করে দাঁড় করিয়েছিলেন। তৎকালীন জনশিক্ষা আন্দোলনের প্রভাব এই পরিবারকেও সামিল করেছিল বই-কি। প্রথম বামফ্রন্ট সরকারের সময় হালাহালি গাঁওসভার নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন বিক্রম দেববর্মা। আমাদের সিনিয়র কৃষ্ণকুমার ও পূর্ণলক্ষী, জুনিয়র কৃষ্ণপদ ও কৃষ্ণকান্ত এই পরিবারেরই সন্তান। এই বাড়িতে তখন মাটির দোতলা। মাটির দোতলাবাড়ি তখন হালাহালিতে একটিও ছিল না। তখনকার সময় মাটির দোতলা গ্রামীণ হালাহালিতে রীতিমতো স্ট্যাটাস সিম্বল। নাকাসি পাড়ার দক্ষিণে নাকফুল সংলগ্ন গ্রাম পানবোয়া। তখন পানবোয়াতে বারুজীবী কিছু পরিবারের পানের বরজ ছিল। উপজাতিরা জঙ্গলের গাছে গাছে পানচাষ করতেন। জায়গাটিকে ফাতেই বলং বা পানের জঙ্গলও বলা হত। ককবরক ভাষাই ফাতেই মানে পান। বলং মানে জঙ্গল। পান ও গুয়া অর্থাৎ সুপারি থেকেও পানবোয়া নামটি আসতে পারে। পানবোয়ার বাঙালি বসতি পর্যন্ত এলাকা নাকফুল কলোনি। পানবোয়া, অপরেসকর গাঁওসভার আওতায়। একসময় পানবোয়ার চৌধুরী ছিলেন মধুমঙ্গল দেববর্মা। পরে এর নাম হয় মধুমঙ্গল পাড়া। মধুমঙ্গলের নামে একটি প্রাইমারি স্কুল স্থাপিত হয়েছিল ১৯৫৭ সালে। পানবোয়া থেকে ডানদিকে রাস্তা চলে গেছে লুৎমার দিকে। বাঁদিকে পাহাড়ি ফাঁড়িরাস্তা আঠারোমুড়ার ভেতর দিয়ে চলে গেছে খোয়াই মহকুমার তুলাশিখরের দিকে।
বৈষ্ণব ভাবধারায় দীক্ষিত মণিপুরি ও বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি সম্প্রদায়ের গভীর ভাবভক্তি। দুই সম্প্রদায়ই ব্রাহ্মণ পুরোহিতকেন্দ্রিক। তখন হালাহালিতে চারটি মণ্ডপ। দেবীছড়ায় তিনটি। বিন্দুমাধব চ্যাটার্জির মণ্ডপ। দ্বিতীয়টি গৌরনিতাই শর্মার। তৃতীয় মণ্ডপের পুরোহিত সেনা ঠাকুরের মৃত্যুর পর তাঁর বড়ো ছেলে গোপেশ্বর শর্মা মণিপুর চলে গেলে মণ্ডপের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন বিন্দুমাধব। লুৎমাতে তিনটি। আভাঙ্গায় দুটি মণ্ডপ। মানিকভাণ্ডারে একটি। পঞ্চাশি, লালছড়ি, বড়সুরমাতে একটি করে মোট তিনটি। কমলপুরে তিনটি। একেকটি মণ্ডপের আওতায় মণিপুরি পরিবারগুলি যজমানি সিংলুপ। বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি পরিবারগুলিকে বলে যজমানি। মহকুমার সমস্ত মণ্ডপগুলোকে নিয়ে লেইবাক বা পরগণা। মণ্ডপের প্রধান পুরোহিত। লেইবাক বা পরগণার প্রধান পুরোহিত কীর্তনমপু। সবার সম্মতিক্রমেই কীর্তনমপু নির্বাচিত হন। দুই সম্প্রদায়ের একজনই কীর্তনমপু। বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় ব্যাপারে তাঁর সিদ্ধান্তই শেষ কথা। কোনো পরিবার সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইচ্ছে করলে বাড়িতেও করতে পারে। মণ্ডপেও করতে পারে। বাড়িতে করলেও মণ্ডপের ব্রাহ্মণের পৌরোহিত্য বাধ্যতামূলক। যে পরিবারের কর্তা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তাকে বলা হয় কর্মধারী। বাড়ি ও মণ্ডপে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সভামুখ্য থাকেন মণ্ডপের পুরোহিত। অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ যদি লেইবাক বা পরগণাস্তরে করা হয় তবে সেই অনুষ্ঠানের সভামুখ্য থাকেন কীর্তনমপু।
চৌধুরীবাড়ির লাগোয়া কৃষ্ণ শর্মা ও পূর্ব হালাহালির নাগেশ্বর চ্যাটার্জির মণ্ডপ অনেক পুরোনো। কৃষ্ণ শর্মার বাবা কুঞ্জেশ্বর শর্মা সিলেট থেকে যখন হালাহালিতে আসেন তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র নয়। কুঞ্জেশ্বরের দুই ছেলে। বড়ো ছেলে মদন শর্মা একসময় হালাহালি ছেড়ে মণিপুর চলে গেছিলেন। একদিন বিকেলে কৃষ্ণ শর্মার মণ্ডপে কান্নার রোল শুনে ছুটে যেতে গিয়ে থেমে গেলাম। একটু দূর থেকে দেখলাম যোগেন্দ্র স্যার হাউহাউ করে কাঁদছেন। ছোটোবেলা থেকে অনেক বয়স্ক মানুষকে কাঁদতে দেখেছি। ঘুম ও কান্নার সময় মানুষকে শিশুর মতো দেখায়। এরকম দেখলে কেমন যেন বুক ফেটে যেত। স্যার আমাকে দেখতে পাননি। ঋজু ব্যক্তিত্বের মানুষটিকে কাঁদতে দেখে বুক ফেটে যাচ্ছিল। রাতে লক্ষীদিকে স্যারের কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করেছিলাম। লক্ষীদি বলেছিল, বেশ কয়েকটি মণিপুরি পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে মণ্ডপের কোনো আনুষ্ঠানিক ও সামাজিক যোগাযোগ থাকবে না। পরদিন স্কুলে গিয়ে অভিজিৎকেও কিছু বলিনি। বাবার কান্নার কথা শুনতে কোনো সন্তানেরই ভালো লাগবে না। তখন থেকেই হালাহালিতে উগ্র রাজনীতি মানুষের ধর্মীয় ও সমাজ জীবনের রন্ধ্রপথেও ঢুকে পড়ছিল। ক্ষমতার কাচ্ছাকাছি থাকা, ক্ষমতার অপব্যবহার মানুষকে ক্রমেই সংকীর্ণ করে তুলছিল। মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিবাদী ও প্রশ্ন উত্থাপক যজমানদের একঘরে করে রাখার সংস্কৃতি আস্তে আস্তে উঁকি মারছিল। ব্রাহ্মণেরা চাইতেন প্রশ্নহীন আনুগত্য। ব্রাহ্মণ্য আধিপত্যবাদকে কাজে লাগিয়ে স্বার্থসিদ্ধির ঝোঁকও দেখা দিচ্ছিল। মণ্ডপের কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বা ব্রাহ্মণের পক্ষপাতমূলক আচরণে ক্ষুব্ধ বা একঘরে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি ও মণিপুরি পরিবারগুলো যোগ দিত অন্য কোনো মণ্ডপে। সম্পন্ন কোনো কোনো পরিবার হয়তো কোনো মণ্ডপেই যোগ না দিয়ে সামাজিক ও ধর্মীয় ক্রিয়াকর্মে বাইরে থেকে পুরোহিত নিয়ে আসত। যোগেন্দ্র স্যার ও অন্যান্য পরিবারগুলোর একঘরে করে দেওয়ার কারণ হয়তো এরকমই কিছু ছিল। শোনা যায়, হালাহালির তালুকদার ব্রজকিশোর সিংহের সঙ্গেও তদানীন্তন পুরোহিত কুঞ্জেশ্বর শর্মার ব্যক্তিত্বের একটি ঠান্ডা লড়াই ছিল।
ক্রমশ…
খুব সুন্দর । ঝর ঝর করে এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলা যায় । আর এক অসম্ভব লেখনী শক্তি পাঠককে পড়িয়ে ছাড়ে। ধন্যবাদ প্রবুদ্ধ দা।
এবারের লেখা গতিময় আর উত্তেজনায় থমথম।