শিবানীর যখন জ্ঞান ফিরল তখন ও ওর বার্থে শুয়ে। জ্ঞান হওয়ামাত্রই সেই কিশােরীটির বুক ফাটা আর্তনাদ কানে আসে।
—মা, মা, ঐ, ঐ ওরা আসছে। মা, মা-আঃ আঃ! চীৎকার করে আবার জ্ঞান হারায় সে।
সারা শরীরের অসহ্য ব্যথা সহ শিবানী উঠে বসে ওর বার্থে। ছােরা মারা ভদ্রলােকের স্ত্রী মুমূর্ষ স্বামীর শিয়রে বসে অঝােরে ঝরিয়ে দিচ্ছে চোখের জল। এই ক’দিন আগেই না সুরু হয়েছে তাদের মিলিত জীবনের দ্বৈত যাত্রা। আর এর মধ্যেই কি সব শেষ হয়ে যাবে? কত আশা, ঈপ্সা, ভবিষ্যতের কত পরিকল্পনা। সবই কি ফুরিয়ে যাবে একটি মানুষের দুটি চোখের চারটি পাতা পরম্পর আবদ্ধ হবার সঙ্গে?
শিবানী বার্থ ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। এগিয়ে যায় ব্যথাহতা নবােঢ়া বধূটির কাছে। বধূটি ভাষাহীন শূন্য দৃষ্টিতে তাকায় শিবানীর মুখের দিকে। মুহূর্ত মধ্যে যেন শিবানী পাঠ করে ফেলে তার মনের হাহাকার। মাথা আপনি নীচু হয়ে আসে ওর। মনে মনে ভাবে মানুষের চেয়ে নিকৃষ্ট পশু বােধ হয় জীবজগতে আর কেউ নেই।
শিবানীর কেমন যেন ইচ্ছা জাগে বধূটির মাথায় একটু সান্ত্বনার হাত বুলিয়ে দিতে। মাথায় হাত রাখতেই চোখে আঁচল চাপা দিয়ে সে ডুকরে কেঁদে ওঠে। শিবানীর চোখেও জল ছাপিয়ে আসে। আঁচলের খুঁটটা চোখে ঘষে নিয়ে ও এগিয়ে যায় পরিত্রাহি চীৎকারে আর্তনাদ রত শিশুটির কাছে। মা তাকে শত চেষ্টাতেও শান্ত করতে পারছে না। শিবানী মায়ের কোল থেকে শিশুটিকে নিয়ে নানা ভাবে শান্ত করতে চেষ্টা পেল। নতুন মানুষ, নতুন কোল, নতুন মুখ—শিশু কান্না ভুলে ফ্যাল ফ্যাল করে চাইল শিবানীর মুখে। শিবানী তার কচি ঠোঁটে চুমু এঁকে দিল। ভুলল শিশু। শান্ত হল সে, স্তব্ধ হ’ল কান্না। ঘুম, ঘুম নেমে এলাে তার আঁখির আসনে। ক্লিশ্যমান শান্ত শিশুকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়ে শিবানী এগিয়ে গেল কিশােরীর কাছে। সিত সুন্দর কচি কিশােরীর মুখে জগতের সব ভয় এসে যেন জমাট বেঁধেছে। জ্ঞান ফিরে আসামাত্র আবার সে ভীত করুণ আর্তনাদ করে উঠছে। দু’হাতে পরম আশ্বাস পেতে মায়ের গলা আঁকড়ে ধরছে।
তিনটি ষ্টেশন পরে যে ষ্টেশনটা আসবে সেখানে একটা অক্সিলিয়ারী হসপিট্যাল আছে। সেখানে আহতদের নিয়ে যাওয়া যায় কিনা, সে নিয়ে বাঙ্গালী যাত্রীদের মধ্যে পরামর্শ হল। কিন্তু পাছে আবার তাদের আর কোন বীভৎসতর আক্রমণের সম্মুখীন হতে হয়, এই ভেবে সেখানে না নামাই সাব্যস্ত করে সকলে।
শিবানী ফিরে আসে নিজের বার্থে। জানালায় চোখ পেতে আবার বাইরে তাকায়—অন্ধকারের বুকে এখানে ওখানে জ্বালিত ঘর বাড়ী চোখে পড়ে ওর। আসাম ট্রাঙ্ক রােডের বাড়িগুলাে যেন কালানলে পুড়ছে। ক্রমে ওর মন আচ্ছন্ন হয়ে আসে শুভ্রেন্দুর চিন্তায়। মনে মনে ভগবানের দরবারে একান্ত আর্জি পেশ করে :
—ভগবান, কানাই কাকতি যেন ওর কিছু অকল্যাণ করে না বসে।
আর ক’টাই বা ষ্টেশন—মাত্র চারটে। তারপর পৌঁছে যাবে ও ওদের গ্রাম সন্নিহিত ষ্টেশনে। হঠাৎ ওকে দেখে সবাই অবাক হবে—বাবা অবাক হবে—মা অবাক হবে, জ্যাঠামণি অবাক হবে, জ্যেঠিমা অবাক হবে। আর শুভ্রেন্দু? হ্যাঁ, তার কাছ থেকে সে পাবে তার দুঃসাহসিকতার জন্য তিরস্কার, সে তিরস্কার যেন তারই মঙ্গল সংবাদের মাধ্যমে শিবানীর মাথায় পুরস্কার হয়ে বর্ষিত হয়।
দূরে তখন আসন্ন একটা ষ্টেশন। সিগন্যাল ডাউন হয়েছে।
ষ্টেশনের টিমটিমে কেরােসিন আলােগুলাে ভূতুড়ে আলার মত দেখাচ্ছে। ষ্টেশন ইয়ার্ডটা কেমন যেন ছায়া ছায়া—রহস্যময় মনে হয় শিবানীর। ট্রেনটা ষ্টেশনে ইন করছে যখন ঠিক তখনই খানিকটা দূর থেকে বেশ কটি মশাল তার লেলিহান শীষ সর্বস্য শিখার আলাে ছড়াতে ছড়াতে দ্রুত এগিয়ে আসে ষ্টেশনের দিকে। গাড়ী থামতে না থামতেই গুণ্ডারা ট্রেনের কামরাগুলাে আক্রমণ করে তছনচ করতে শুরু করে। শিবানীদের কামরায় উঠেই দরজার বাঁ দিকের বার্থে ওকে পেয়ে ওর হাত ধরে আকর্ষণ করে—। কিন্তু শিবানী শক্ত হাতে জানালার ফ্রেম ধরে থাকায় দু’জন দুর্বৃত্ত তার পা ও মাথা ধরে মড়া নেবার মত করে শূন্যে শূন্যে ওকে নিয়ে উধাও হয়।
শরীরের সমস্ত শক্তিতে চেষ্টা করেও পশু শক্তিকে প্রতিহত করতে পারে না ও। ওরা ওকে লেডিস ওয়েটিং রুমের মেঝেতে একান্ত অবহেলায় নামিয়ে দেওয়ামাত্র ওদের পেছন থেকে ততোধিক ভীষণ দর্শন একটা লােক এগিয়ে এসে কর্কশ কণ্ঠে ওদের বলে :
তােরা যা, নতুন মাল দেখ গে, এটার ব্যবস্থা আমি করছি।
লােক দুটি আদেশ মত ওরা বেরিয়ে যায়। বিগ্ন শিবানীও তড়িৎ উঠে প্রস্থান করতে যায় ওদেরই সঙ্গে; কিন্তু ততক্ষণে একটা বলিষ্ঠ হাত অবলীলাক্রমে ওর গলা ধরে পেছনে হেঁচকা টান মেরেছে। বিধূনিত শিবানীর মনে হ’ল লােকটার শক্ত হাতের চাপে বুঝি ওর গলার হাড়গুলাে এখুনি মড়মড়িয়ে ভেঙ্গে যাবে। ক্রীড়ণীয় পুতুলের মত শিবানীকে ছিটকে ফেলে দিয়ে লােকটা দ্রুত হাতে দরজায় ছিটকিনি এঁটে দিল। তারপর সে যখন তার লাল ভাঁটার মত চোখ দুটির শিকারী লােলুপ বাঘের মত তীক্ষ দৃষ্টি শিবানীর দিকে নিবদ্ধ করল তখন তার অন্তরাত্মা থরথর করে কেঁপে উঠল। ভীষণ সে দৃষ্টিতে তখন কামনার আগুন ধ্বক্ ধ্ব করে জ্বলছে। সে তার দুটি বলিষ্ঠ সবল বাহু বাড়িয়ে কুটিল ভঙ্গিতে বিকরাল মূর্তিতে যেন শিবানীকে গ্রাস করতে আসছে। আরও আরও কাছে; এইবার কোপিত কলুষ পশু-শক্তির কাছে শিবানীর অনাঘ্রাত কুমারী কুসুমের মত পবিত্র নারীত্ব হবে কীটদুষ্ট। মুহূর্তে সঙ্কল্প স্থির করে দুর্মনা শিবানী। দেহের সবটুকু শক্তি ও নিয়ে যায় ডান পা টায়—তারপর মনের দৃঢ়তার নির্দেশে সেই পায়ে প্রচণ্ড এক আঘাত হানে লােকটার পেটে। কুঁই’ করে শব্দ হয় একটা।
‘ —“ইয়া আল্লা’।
বলে ও পড়ে যায় মেঝেতে। এই সুযােগ! মুহূর্ত মধ্যে যদি ছিটকিনি খুলে পালাতে না পারে—তবে তার ভবিষ্যৎ ভেবে শিউরে ওঠে শিবানী। ত্বরিৎ ছুটে যায় ও দরজার কাছে। রাখে ছিটকিনিতে—তুলে ফেলে সেটা। হ্যাঁ একটা পাল্লা একটু ফাঁক করতে পেরেছে—ঠিক এমনি সময় ওর বাঁ পায়ের পাতার ওপরের সরু অংশটা ধরে টান মারে প্রতিপক্ষ। পড়ে যেতে যেতে দরজা ধরে ঝুলে নিজেকে সামলে নেয় শিবানী। লােকটা বিদ্যুৎবেগে উঠে পড়ে দরজায় এসে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। শিবানীর সরু কোমর জাপটে ধরে পরক্ষণেই ওকে ঠেলে ফেলে দিয়ে আবার তুলে দেয় ছিটকিনি।
একটি শাড়ি পরা মেয়েকে যে গুণ্ডারা লেডিস ওয়েটিং রুমে নিয়ে গেছে ষ্টেশন মাষ্টার বরণীয় বসু তা লক্ষ্য করেছে। আর মেয়েটির ভবিষ্যৎ ভেবে শিউরে উঠেছে। ঐ অসহায় নারীর নারীত্ব রক্ষার জন্য তার কি কিছুই করণীয় নাই? আছে।
কিন্তু যদি জানতে পারে গুণ্ডারা যে মিলিটারীতে সে ফোন করেছে, তবে ?..হ্যাঁ বিপদ তার হবে। তাই বলে ত’ সে পশুত্বের পরওয়ানা নিয়ে যারা নারীর ধর্মকে করছে লাঞ্ছিত তাদের প্রশ্রয় দিতে পারে না। মনের উপজ্ঞায় উদ্বুদ্ধ হয়ে টেলিফোনটা তুলে নিয়ে পার্শ্ববর্তী বড় ষ্টেশনে ফোন করে।
ষ্টেশন ইয়ার্ড এবং রেলের কামরায় কামরায় তখন চলেছে গুণ্ডাদের উন্মত্ত উল্লাস। ভয়ার্ত পুরুষের ব্যর্থ বাধা দান ভীষিত শিশুর আর্তনাদ, লাঞ্ছিতা নারীর করুণ কান্নায় গােটা পরিবেশটা হয়ে উঠেছে নারকীয়।
ষ্টেশন মাষ্টারের ঘরে ঢুকে পড়ে দুর্বৃত্তরা টিকিট বিক্রী করে পাওয়া পয়সাকড়ি ছিনিয়ে নেবার আশায়। এমন সময় তাকে ফোনের রিসিভার ও স্পীকার যথাক্রমে কানে ও হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে দেখে প্রচণ্ড ক্রোধে শানিত ছােরা নিয়ে আক্রমণ করে গুণ্ডাদের একজন। বুকফাটা আর্তনাদ করে মাটিতে পড়ে যায় মাঝ বয়েসী ষ্টেশনমাষ্টার। যন্ত্রণাকাতর দেহ তার কাটা পাঁঠার মত গড়াগড়ি যায়। গুণ্ডারা হেসে ওঠে ভয়াল অট্টহাসি।
লেডিজ ওয়েটিং রুমে নারীত্ব রক্ষার অটুট সঙ্কল্পবদ্ধ এক নারী আর কামােন্মাদ মানুষ পদবাচ্য এক দ্বিপদ পশুর মধ্যে চলেছে দ্বন্দ্ব যুদ্ধ। শিবানীর পরণের শাড়িটা ফাতাফাতা হয়ে হেলায় পড়ে আছে ঘরের এক কোণে। ভয়েলের পাতলা ব্লাউজের অস্তিত্ব তখন উর্ধাঙ্গে অবশিষ্ট আছে সামান্যই। বডিস-এর ইলাষ্টিক বেল্টটা ক্রুদ্ধ আক্রোশে ছিড়ে ফেলেছে পশুটা। ঘন ঘন নিশ্বাস পড়ছে বিবসন প্রায় শিবানীর। কি একটা অদৃশ্য প্রচণ্ড তেজ যেন ওতে ভর করছে। ওতে ভর করা সেই শক্তিই এতক্ষণ ধরে যেন যুঝে যাচ্ছে এই ক্ষেপা পশুটার সঙ্গে।
আসামের এক শ্রেণীর শিক্ষিত নেতা ও ছাত্র, যারা জনগণের বৃহৎ অংশের আস্থাভাজন—তারা বাপুজানকে লেলিয়ে দিয়েছে বাঙ্গালীদের বিরুদ্ধে। বাঙ্গালীকে ভিটেছাড়া কর, বাঙ্গালী মেয়েদের বে-ইজৎ কর, পুরুষদের কোতল করা মাথা নিয়ে গেণ্ডুয়া খেল। পুরস্কার? হ্যাঁ পুরস্কার পাবে বাঙ্গালীর যত সম্পত্তি। তবে তুমি যে ভাষায়ই কথা বল না কেন আদমশুমারীতে তােমাদের অসমীয়া ভাষাভাষী বলে পরিচয় লিখে দিতে হবে।
তা দিতে হয় হােক। মদান্ধ বাপুজান স্বপ্ন দেখেছে বাঙ্গালী রিফিউজিদের সব জমিতে লাঙ্গল চালাবে। আসামের হিন্দু নেতারাই যখন এইভাবে উস্কিয়েছে—সে ত’ নিমিত্ত মাত্র। এমন কোন পাপ তাকে স্পর্শ করবে না যাতে তাকে দোজকে যেতে হতে পারে। বরং তার একাজ এক শ্রেণীর নেতার কাছে তার ‘কুদরত’ বলে বিবেচিত হবে।
বাপুজান শরীরের শেষ শক্তি আরোপে ঝাঁপিয়ে পড়ে শিবানীর ওপর। ইস্পাত-শক্ত হাতটা দিয়ে জাপটে ধরে শিবানীকে। তার প্রবল আকর্ষণে ক্লিশিত শিবানী নিজের মন ও শরীরের শেষ শক্তিতে চেষ্টা করে পশুতুল্য প্রতিপক্ষকে প্রতিহত করতে। নাঃ, আর বুঝি পারে না-প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রুরকর্মার সঙ্গে সামান্য এক নারী কতক্ষণ যুঝতে পারে? কতক্ষণ যােঝা তার সম্ভব? বাপুজানের সবল শক্ত জাপটে ধরা হাতের আকর্ষণে মেঝেতে পড়ে যায় শিবানী। কপালে চোট লাগে। রক্ত ঝরে। লজ্জার আভরণ হিসাবে দেহে তার তখন মাত্র কটিদেশের সায়াটা। এক হাতে শিবানীর দুটি হাত সুদ্ধ উর্ধাঙ্গ শক্ত বাঁধনে জড়িয়ে ধরে বাপুজান আর অন্য হাতে তার শিকারের অধােঅঙ্গ উলঙ্গ করবার প্রয়াসে সায়াটা তুলতে যায়। শিবানী প্রবলভাবে দেহ আন্দোলিত ক’রে ছিটকে পড়ে মুক্ত করে নিজেকে।
বাপুজানও ততক্ষণে হাঁপিয়ে উঠেছে। এত প্রচণ্ড শক্তি যে কোন অবলা নারীর দেহে থাকতে পারে তা তার ধারণার বাইরে। এই দাঙ্গা শুরু হবার পর এই নিয়ে দশটি নারীর দেহে এঁকে দিয়েছে সে লাঞ্ছনার কেলেঙ্কার—কিন্তু কোথাও এর আগে এমন প্রতিবন্ধকতা ত পায় নি।
হাঁফিয়ে উঠেছে শিবানীও। প্রতিপক্ষের দূরত্ব বাঁচিয়ে দেয়াল ঘেষে দাঁড়িয়ে সেও ঘন ঘন নিশ্বাস নিচ্ছে। চোট লাগা কপাল থেকে রক্তের একটা সরু রেখা গড়িয়ে নাক, গাল ও ঠোঁট বেয়ে নেমে আসছে। চোখদুটো তারও এতক্ষণে প্রবল উত্তেজনায় জবার মত লাল হয়ে উঠেছে। আপেল-লাল গাল দুটো ফেটে যেন এখুনি রক্ত বেরিয়ে পড়বে। যুদ্ধমান শিবানী উত্তেজনায় নীচের ঠোঁটটা কামড়ে দাঁত বসিয়ে দিয়েছে ক’বার।
কিছুটা দম নিয়ে নবােদ্যমে বাপুজান আবার শিবানীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তার শক্ত হাতে ওর দেহে একমাত্র আবরণ সায়াটা তুলে ফেলে তাকে দেয়ালে ঠেসে ধরে সমস্ত শক্তি দিয়ে। ঠিক এমন সময় দরজায় অশান্ত আঘাত শুরু হয়। সঙ্গে সঙ্গে মােটা গলার আদেশ আসে :
—দরওয়াজা খােল?
পরক্ষণেই দমাদম ভারি বুটের লাথি পড়ে তাতে। কথাটা শােনামাত্র শিবানীকে জাপটে ধরা উদ্রিক্ত বাপুজানের বলিষ্ঠ হাতের বাঁধন কেমন যেন শিথিল হয়ে আসে। উদ্বেজনের ছায়া পড়ে তার চোখে মুখে। হাতের শিকার ছেড়ে দিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে যেন পলায়নের পথ খোঁজে। কিন্তু লােহার শিকসহ জানালা ও এক দরজার ঘরে ত’ তেমন কোন সুযােগ নেই। হতাশায় মিইয়ে যায় যেন বাপুজান।
দরজায় তখনও প্রচণ্ড আঘাত বর্ষিত হচ্ছে। পাল্লাগুলাে কাঁপছে থরথর করে। পরক্ষণেই একটা পাল্লা ছিটকে পড়ল পাশে। সঙ্গে সঙ্গে দু’তিনজন মিলিটারী ভারি পায়ে ঢুকে পড়ল ঘরে। বাপুজান শেষবারের মত পালাবার চেষ্টা করতেই ওদের একজন তার বুকে সঙ্গীন উঁচিয়ে ধরল।
নোট- বানান অবিকৃত